গল্প :- একটি সুন্দর বিকেল ,,, আসলেই মানুষ প্রেমে পড়লে বুঝতেই পারে না কেমন করে সময় পার হয়ে যাচ্ছে

কোথাই তুমি, আর ফোনটা ধরছো না কেনো? (রাইসা)
-এইতো আসছি গাড়িতে চড়লাম,পাশে মা ছিলো তাই
ফোন ধরতে পারিনি(আকাশ)
-আচ্ছা তারাতারি আসো আমি বসে আছি.
-আচ্ছা আসছি।
.
রাইসা আর আকাশ দুজন প্রেমিক প্রেমিকা।
তাদের প্রেমের বয়স দুই বছরের মতন।
প্রথমে আকাশই রাইসাকে প্রপোজ করেছিলো।
রাইসা সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে রাজী হয়েছিলো। তারপর
থেকেই শুরু হয় রাগ,হাঁসি কান্না সব খুনসুটি ও
ভালোবাসা।
এভাবেই পার হয়ে যায় দুটি বছর।
.
আসলেই মানুষ প্রেমে পড়লে বুঝতেই পারে না কেমন করে
সময় পার হয়ে যাচ্ছে।
.
আজকে আকাশ রাইসার কাছে থেকে একটি বিকেল
চেয়েছিলো।
সেইজন্য রাইসাও না করেনি। ভালোবাসার মানুষ বলে
কথা।
.
রাইসা আগে থেকে চলে এসেছে,কিন্তু আকাশের কোন
নাম গন্ধই নেই।
সেই কারনে রাইসা ব্যাঙ্গের মতন ফুলে আছে।
আকাশ আসলেই সেটা ধুপ করে ফাটাবে।
.
আকাশ ঘড়িতে সময় দেখে নিলো। এখন পুরো ৪-১৭ মিনিট।
পার্কে ঢুকার আগেই দেখে নিলো রাইসা হলুদ একটা
সালোয়ার কামিজ পরে বসে আছে।
দুর থেকে রাইসাকে দেখতে অপূর্ব লাগছে।
.
আকাশ ভেবে চিন্তে একটি লাল গোলাপ কিনলো।
রাইসার রাগ তো কমিয়ে ফেলতে হবে।
কারন,
আসার কথা কখন আর আসছি কখন।
রাইসার কাছে গেলাম।
.
-রাগ করেছো (আকাশ)
-না রাগ করবো কেনো(রাইসা)
-আচ্ছা সরি,আর এমন হবে না,এইযে কান ধরলাম।
-ছাড়ো ছাড়ো, আমার কান ধরেছো কেনো।
-ওহ সরি।
-ভুল করে খালি সরি বলা, এখন থেকে নো সরি,ভুল করলেই
কান ধরে উঠবস করতে হবে।
-আচ্ছা তুমি যা বলবে তাই করবো।
এখন চলো।
-কোথাই যাবো।
-ফুচকা খেতে যাবো।
-ও তাই নাকি! বিল কে দেবে তুমি?
-হ্যাঁ, কি মনে হয়।
-না এতোদিন তো আমিই দিতাম।
টাকা কই পেলে।
-মা দিয়েছে।
-সত্যি করে বলো আকাশ,টাকা কই পেলে। তোমার চোখ
বলছে তুমি মিথ্যা বলছো।
-গতকাল কাজ করেছিলাম।
তাই টাকা পেয়েছি।
-কি কাজ।
-আমাদের বাড়ির পাশের বাড়ির একজনের জমিতে।
-আমি কি তোমাকে বলেছি যে এসব করতে।
-আরে চলোতো, একদিন না হয় করেছি কাজ।
বলেই টানতে টানতে নিয়ে গেলো ফুচকার দোঁকানে।
.
দুইজনে দুই প্লেট ফুচকা খেলো। অন্যদিন এক প্লেট ভাগ
করে খেতো।
আজকেও একপ্লেট ভাগ করে খাবে বলছে রাইসা,কিন্তু
আকাশের জন্য আর হলোনা, সে দুই প্লেটের অর্ডার
দিয়েছে।
.
ফুচকা খেয়ে বিল মিটিয়ে দুজনে নদীর পাড়ে হাঁটছে।
মনে হচ্ছে তারা জেনো এক অপরকে হাঁজার বছর ধরে
চিনে ।
.
-তুমি এতো ভালোবাসো আমাই (রাইসা)
-হটাৎ এই প্রশ্ন। (আকাশ)
-তাহলে কাজে গিয়েছেলো কেনো।
-এমনিতেই ডাকলো, সেইজন্য গিয়েছিলাম।
-কিন্তু তোমার যে হাত অনেক খানি কেঁটে গিয়েছে।
-তুমি কেমন করে জানলে।
-আমি জেনেছি ।
তুমি তো জানই আকাশ তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি
বাঁচবো না।
(কেঁদে কেঁদে)
-আরে কাঁদছো কেনো,কান্না থামাও।
-আগে বলো এখন থেকে নিজের খেয়াল রাখবে।
-হ্যাঁ রাখবো এখন কান্নাটা বন্ধ করো।
রাইসা কান্না থামালো।
রাইসার হাত ধরে দুজনে নদীর পারে হেটে চলেছে, গন্তব্য
জানা নেই।
.
সূর্য টা লাল বর্ণ ধারন করেছে।
এসময় টা অনেক সুন্দর ও সুখের সময়।
হটাৎ করে আকাশ রাইসার হাত ছেড়ে দিয়ে হাটু গেড়ে
দিয়ে বলছে,
-আমি তোমাকে ভালোবাসি রাইসা,অনেক ভালোবাসি।
(হাতে একটি লাল গোলাপ)
-আরে বুদ্ধ আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি,এখন
ওঠো।
-ফুলটা নেবে না।
-না ওটা আমার খোপাই পড়িয়ে দাও।
আকাশ কথাটি শুনে অবাক হয়ে গিয়েছে।
খোপাই কোনদিন গোলাপ দিয়েছে কেউ এমন কাউকে সে
কখনো দেখেনি।
.
তবুও আকাশ রাইসাই চুলে গোলাপ ফুলটি পড়িয়ে দিলো।
রাইসা আকাশের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আকাশ ও তাকিয়ে আছে রাইসার চোখের দিকে।
দুজনের চোখে একটিই স্বপ্ন একসাথে বেঁচে থাকা,
একসাথে মরে যাওয়া।
.
আরো কিছুক্ষন দুজনে দুজনার হাত ধরে ঘুরলো ।
এখন সময় চলে যাবার।
দুজনেই দুজনার চোখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে বিদায়
নিলো।
তবে অপেক্ষা করে রইলো আবার এমন একটি বিকালের।
.
ভালোবাসার মানুষকে একটু সময় দিয়ে দেখুন, কত
আনন্দের সেই সময় টুকু ।
সেটা কখনো মনে পড়লেই আপনি একা একা মুচকি
হাঁসবেন
.
আসলেই সুখের সময় টা খুব অল্প। অল্পতেই সুখ ফুরিয়ে
যায়।
দুঃখের সময় অনেক দীর্ঘ, যেটা সহজে শেষ হয় না।
.

Total Pageviews