কেমন বয়সেরমেয়ে বিয়ে করা উচিৎ?

[image]ইতিপূর্বে একাধিকবারপুরুষের পাত্রী নির্বাচনএবং শারীরিকসমস্যা নিয়ে লিখেছি।এখনও আমাদের সমাজে অনেকক্ষেত্রে ধারণা করা হয়ে থাকে পুরুষের আবার বিয়ের বয়সকিসের। পুরুষ মাত্রেইযে কোন বয়সেরএকটি মেয়েকে ঘরে তুলতে পারে কিন্তু বিষয়টিরসামাজিক প্রেক্ষাপটেরচেয়ে শারীরিক বিশ্লেষণবেশী গুরুত্ব দেয়া উচিত। এইমুহূর্তে বিয়েরক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর বয়সনিয়ে লেখার কোন ইচ্ছেইছিলো না। পুরুষের অন্যএকটি বিষয়লিখবো ভেবেছিলাম।কারণ আমার এক পুরুষ রোগীরদীর্ঘদিন পর পিতা হবারচিকিৎসার পেক্ষাপটনিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম।এবিষয়টি পরে লেখা যাবে।যাহোক যা বলছিলাম,দু’তিন, দিন আগে আমারচেম্বারে একটা মেয়ে আসে।উজ্জ্বল শ্যামলা। শরীরের গড়নহালকা। মেয়ে বললে ভুলহবে, কিশোরী বলাইভালো। নারায়ণগঞ্জেরসোনারগাঁয়ে বাড়ী।সোনারগাঁও বললে,আমি নানা কারণে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ি। তার একটি কারণহচ্ছে আমার লেখনীরশিক্ষাগুরু প্রখ্যাতসাংবাদিক লেখক ওকলামিষ্ট জনাব শফিকুল কবিরএর বাড়ী এইসোনারগাঁওয়ে। যাইহোক, সোনারগাওয়েরসেই মেয়েটি বললেন,আমি ফর্সা হতে চাই ডাক্তারসাহেব। আমি বললামতুমিতো অনেক সুন্দরএবং তোমার গায়েররং যথেষ্ট ভালো।মিয়েটিকে আশ্বস্তকরতে বললাম, আমার মেয়েরগায়ের রং ও তোমার মত।তাছাড়া ত্বক ফর্সা করারকোন চিকিৎসা নেই।আজকাল কিছু কিছুবিউটি পার্লারেরঅপপ্রচারে বিভ্রান্তহয়ে তরুণী-মহিলারা ছুটছেনতক ফর্সা করতে। আসলে ত্বকফর্সা করার কোনব্যবস্থা চিকিৎসা শাস্ত্রে নেই। বহুবারবলেছি আমি আমেরিকা ওসিঙ্গাপুরের দু’টি বিখ্যাতহাসপাতালে স্কিন, লেজারও কসমেটিক সার্জারির ওপরউচ্চতর প্রশিক্ষণ নেয়ার সময়কখনও ত্বক ফর্সা করা সম্ভব এমনকথা শুনিনি। কখনও কেউবললেনি ত্বক ফর্সা করা যায়।তবে আজকাল লেজারটেকনোলজির সুবাধে ত্বকব্রাইট করা যায়,ফর্সা করা যায় না। মুখেরব্রাউন স্পট, পিগমেন্ট, তিল,মোল, আঁচিল, অবাঞ্ছিতলোম দূর করা যায়। ত্বকফর্সা করার কোন লেজার ওচিকিৎসা এখনও বের হয়নি।তবে তথাকথিত হুয়াইটিনিযসিস্টেমের নামে মুখের ত্বকপুড়িয়েং দিয়ে ফর্সা করারমারাত্মক ক্ষতিকর উপায়নিয়ে দু’একটি বিউটি পার্লারপ্রচার করে থাকে। এসবঅবৈজ্ঞানিক মারাত্মকক্ষতিকর হুয়াইটিং সিস্টেমনিয়ে আর একদিন বিস্তারিতলিখবো।সোনারগাঁও এর ঐমেয়েটিরকাছে জানতে চাইলাম-তুমি কেন ত্বকফর্সা করতে চাইছো।প্রথমে মেয়েটি সংকোচবোধ করলেওসে জানালো আমারবিয়ে হয়েছে একমাস।স্বামী আমেরিকা প্রবাসী।বর্তমানে দেশে আছে।স্বামী চায় আরও ফর্সা ত্বক।এরপর জানতে চাই তোমারস্বামী কোথায়।মেয়েটি বললো ও আমারসঙ্গেই এসেছে।ধারণা ছিলো অষ্টমশ্রেণীর ছাত্রী ১৪/১৫ বছরেরমেয়েটির স্বামীর বয়স২০/২২-এর বেশী হবে না।ওমা বয়সে ৩৮/৪০ এর কমহবে না। প্রথম মিনিটখানেক ভীষণ রাগহয়েছিলো। যাহোক,রোগীদের ওপর রাগ করারকোন অধিকার ডাক্তারেরনেই। স্বাভাবিকহয়ে জানাতে চাইলামআপনার নতুন বিবাহিত জীবনকেমন কাটছে। এরপরবেশখানিকটা সময়নিয়ে কথা হলো। ত্বকফর্সা করার ভুলধারণা ভেঙ্গে দিয়ে কিশোরী মেয়েটিকে বাইরেযেতে বললাম। এর পর মধ্যবয়স্কযুবকের কাছে জানতে চাইকেন আপনার অর্ধেকেরচেয়ে কম বয়সেরএকটি মেয়েকে বিয়ে করেছেন। যুবকটি কোন সদুত্তোরদিতে পারলেন না। এইযুবকটি ঢাকারএকটি নামকরা কলেজএবং একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। এরপরযুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।যুবকটি জানালেন এখনইতাদের ব্যক্তিগতজীবনে সমস্যা হচ্ছে। বললেনডাক্তার সাহেব শরীর ঠিকরাখতে কোন ওষুধদেয়া যাবে কিনা।আমি দু’একটি মামুলি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করতে দিয়ে আরএকদিন আসতে বলি।সুপ্রিয়পাঠক, আজ থেকে ১০ বছর পরেরএকটি দৃশ্যেরকথা চিন্তা করুন। যখনসোনারগাওয়েরকিশোরী মেয়েটির বয়সহবে ২৫। পরিপূর্ণ এক যুবতী। আরযুবকটির বয়স হবে ৪৮/৫০। এবয়সে নিশ্চয়ই দু’জনেরচাওয়া-পাওয়ারক্ষেত্রে থাকবে অনেকব্যবধান। এখানে আজকেরকিশোরীটির চিরায়তবাঙালী চরিত্রের রূপায়ণঅর্থাৎ সব কিছুনিরবে মেনে নিয়ে বয়স্কস্বামীর ঘরকরা অথবা পরিবারেরসকলের অমতে ভিন্নচিন্তা করাই কিন্তু আমাদেরমত রক্ষণশীল সমাজে সব সময়ছাড়া উপায় নেই।কাজটি করতে পারে না অথবাকরে না। যাহোক, আমাদেরদেশে এখনও আইন বলবৎআছে মেয়েদের ১৮ বছরেরনীচে এবং পুরুষের ২১ বছরেরকম বয়স বিয়ে করা উচিত নয়।বয়সের পার্থক্য কেমনহবে তা অবশ্যআইনে বলা নেই। তবুও একজননগন্য সেক্সোলজিষ্টহিসেবে আমার নিজস্বঅ্যাসেসমেন্ট হচ্ছে বিয়েরক্ষেত্রে নারী-পুরুষেরবয়সের ব্যবধানবেশী থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।এছাড়া কোন অবস্থাতেইমেয়েদের ১৮ বছরেরনীচে বিয়ে দেয়া উচিতনয়। সম্ভব হলে মেয়েদেরনূন্যতম বিয়ের বয়স ২০ বছরনির্ধারন করা উচিৎ।বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়েদের একইবয়সী না হলে বয়সের ব্যবধানসর্বোচ্চ ৫/৭ বছরেরমধ্যে থাকা ভালো।তবে যে কোন মেয়ে তারপরিপূর্ণ বয়সে যে কোনবয়সের পুরুষদের বিয়ে করারআইনগত অধিকার রাখেন।এটা নিশ্চয়ই তার নিজস্বব্যাপার। তবে অপরিণতমেয়েদের ক্ষেত্রে স্বামীরবয়স নির্ধারণ করার দায়িত্বঅবশ্যই অভিভাবক বা পিতা-মাতার। শারীরিক ওমানসিকসমস্যা এড়াতে অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান কমহওয়া উচিত।পাশাপাশি যদি কেউবেশী বয়সে বিয়ে করতে চানতাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বনকরা উচিৎ।এতে ভবিষ্যতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্টনানা সমস্যা এড়ানো যায়।

Total Pageviews