যৌনাঙ্গে চুলকানি হওয়ার কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ!

আসুন জেনে নিই যৌনাঙ্গে চুলকানিহওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।কারণঃ১. ইস্ট বা ছত্রাকের আক্রমণ :এটি যৌনাঙ্গের চুলকানি বা ইচিংহওয়ার অন্যতম কারণ। সাধারণত CandidaAlbicans, এই ছত্রাকের কারণে যোনিতেচুলকানি হয়।উপসর্গ :– যোনি পথ দিয়ে ঘন, সাদা তরলেরনির্গমন হয়।– চুলকানি, ব্যথা ও প্রদাহ হয়।– যৌন মিলনের সময় ব্যথ্যা হয়।২.ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসেরসংক্রমণ :এটি ভ্যাজাইনা বা যোনিতে চুলকানিহওয়ার অন্যতম কারণ। যোনিতেনরমালি কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে।যখন কোন কারণে এই ব্যাকটেরিয়াগুলোর অনেক বেশি বংশবিস্তার ঘটেতখন যোনিতে ইনফেকশন হয়।উপসর্গ :– গন্ধযুক্ত ও মাছের আশঁটে গন্ধযুক্ততরল নির্গত হয় যোনি দিয়ে।– চুলকানি হয় প্রচুর।– প্রসাবের সময় জ্বালাপোড়া হওয়া।৩.ট্রাইকোমোনিয়াসিস এর আক্রমণ :এটি একটি প্যারাসাইট। এটির আক্রমণেযোনিতে চুলকানি হয়।উপসর্গ :– হলুদ, সবুজ রঙের ও খুব তীব্র বাজেদুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয়।– তলপেটে ব্যথ্যা হয়।– যোনিতে চুলকানি হয়।৪....এছাড়াও যৌনাঙ্গে উকুন, খোসপাচড়াও মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়াম এরসংক্রমণ হলে যোনিতে চুলকানি হয়।কিছু সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেডডিজিজ যেমন – সিফিলিস, গনোরিয়া,এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনাঙ্গেইচিং বা চুলকানি হতে পারে।বিভিন্ন বিরক্তিকর পদার্থ যেমন –বিভিন্ন ডিটারজেন্ট, কেমিক্যাল,সুগন্ধিযুক্ত সাবান, রঙ ওয়ালা টিশ্যুপেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে,ডুশ ব্যবহার করলে যোনিতে চুলকানিহতে পারে। মেনোপোজের পরমহিলাদের ইস্ট্রোজেন নামক হরমোনকমে যায়।…৫. মাসিকের সময়, অস্বাস্থ্যকর প্যাড ওকাপড় ব্যবহার করলে। যৌনকর্মীদের এইরোগগুলো বেশি হয়। তাই অবাধ যৌনআচরণের কারণে হয়ে থাকে। যৌনাঙ্গসবসময় গরম ও আর্দ্র রাখলে। অপরিষ্কারথাকলে।প্রতিকার :– ছত্রাকের সংক্রমণ হলে,এন্টিফাংগাল ওষুধ যেমন– ketoconazole,miconazole, clotrimazole, tioconazole,fluconazole ইত্যাদি ওষুধ খেতে হয় ৩থেকে ৫ দিন। তবে কিছু ওষুধ একদিনেওকাজ করে। তাই ডোজ ও কতদিন খাবেনতা জানতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।এছাড়া lactobacillus acidophilus ট্যাবলেটখাওয়া যেতে পারে এর সাথে।– ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলেএন্টিব্যায়োটিক ড্রাগস খেতে হয়।যেএন্টিবায়োটিকই খান না কেন তাকমপক্ষে ৫ থেকে ৭ দিন খাবেন।– প্যারাসাইটের সংক্রমণ হলেMetronidazole খেতে পারেন। এছাড়াওvaginal clindamycin cream (clencin) ortinidazole এইগুলো যোনিতে লাগাতেহয়।– বেশি চুলকানি হলে Lidocaine নামকজেল আক্রান্ত স্থানে লাগাতেপারেন। এতে সাময়িক আরাম হবে।কিন্তু পুরা সেরে যাবেনা। তাইডাক্তারকে দেখাবেন।– চুলকানি কমানোর জন্যএন্টিহিস্টামিন যেমন – fexofenadine,loratadine খেতে পারেন।– এছাড়া প্রদাহ কমাতে steroid creamব্যবহার করা যেতে পারে।– মেনোপোজের পর চুলকানি হলেইস্ট্রোজেন সাপোজেটরি যোনিপথেব্যবহার করা যেতে পারে।প্রতিরোধ :বলা হয়ে থাকে যে কোন অসুখপ্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাইবেশি ভাল। সুতরাং এই রোগটি যাতেআপনার না হয় তাই আগেই সাবধানথাকুন ও নিচের কথাগুলো মেনে চলুন।– রঙীন ও বেশি সুগন্ধিযুক্ত টয়লেটটিস্যু ও সাবান যৌনাঙ্গে ব্যবহারকরবেন না।– ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ও ডুশব্যবহার করবেন না।– ভেজা কাপড় পরে বেশিক্ষণ থাকবেননা। গোসল বা ব্যায়ামের পর যততাড়াতাড়ি সম্ভব ভেজা কাপড়টিপাল্টে নিবেন। যারা সুইমিং পুলেসাঁতার কাটেন তাদের ক্লোরিনেরকারণেও ইচিং হতে পারে , তাইসাবধান হন।– আপনার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখুনসবসময়। আর প্রসাব বা পায়খানা করারসময় হাত দিয়ে সামনে থেকে পেছনেএই নিয়মে পরিষ্কার করতে হবে।খেয়াল রাখবেন পায়খানার রাস্তারজীবাণু যেন যোনিতে না লাগে।– দই খান, এতে ল্যাকটোব্যাসিলাসনামক উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে।– সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি অন্তর্বাসবা পেন্টি পরুন। সিনথেটিক পেন্টিপরবেন না।– ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন।– ওজন কমান।– সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করুন।– যোনি আর্দ্র ও ভেজা রাখবেন না।– মাসিকের সময় নোংরা কাপড়ব্যবহার করবেন না। পরিষ্কার প্যাডব্যবহার করুন।– সহবাসের পর যৌনাঙ্গ ভাল ভাবেপরিষ্কার করুন। ধুয়ে ফেলুন।– সহবাসের পর প্রসাব করুন।– একাধিক ব্যক্তির সাথে যৌন সহবাসপরিত্যাগ করুন।– নিয়মিত গোসল করুন।এই অসুখটি হলে অবশ্যই একজনগাইনোকোলজিস্ট বা একজনডার্মাটোলজিস্ট বা চর্ম ও যৌন রোগবিশেষজ্ঞের কাছে যান। অবহেলাকরবেন না বা লজ্জা পাবেন না। কারণএর ফলে পরবর্তীতে আরও খারাপ কিছুহতে পারে।

Total Pageviews