জিনসেং কি? জিনসেং খেলে সেক্স বাড়ে কি? জিনসেং কি প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা?

একটি গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং বীর্যস্খলনের সময় কাল কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বাড়ায়। জিনসেং মূলটির বয়স ছয়বছর হতে হবে। জিনসেং বর্তমানে সারা বিশ্বে একটি আলোচিত ঔষধি উদ্ভিদ, যার মূলে রয়েছেবিশেষ রোগ প্রতিরোধকক্ষমতা। হাজার বছর ধরে চীন, জাপান ও কোরিয়ায় জিনসেংয়ের মূল বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক, শক্তি উৎপাদনকারী, পথ্য ও টনিকহিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।জিনসেংইংরেজিতে Ginseng। Araliaceae পরিবারের Panax একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি মাংসল মূলবিশিষ্ট এক ধরনের বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি পূর্ব এশিয়াতে, বিশেষ করে চীন, কোরিয়া ও পূর্ব সাইবেরিয়াতে, ঠান্ডা পরিবেশে জন্মে।শক্তিবর্ধক টনিকহিসেবে বিভিন্ন দেশে জিনসেংয়ের প্রচলন আছে। জিনসেং শব্দটা উচ্চারণের সাথে যে দেশটির নাম উচ্চারিত হয় সেটি হলো কোরিয়া। জিনসেংকে অনেকে কোরিয়ান ভায়াগ্রা বলে থাকে।জিনসেং কি প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা? জিনসেং কি, জিনসেং খেলে সেক্স বাড়ে কেন?জিনসেং কিআসলে জিনসেং কী? Ginseng হলো গাছের মূল। এই গাছটির নামই Ginseng। হাজার হাজার বছর ধরে কোরিয়াতে জিনসেং ওষুধি গুণাগুণের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জিনসেং গাছের মূল রোগ প্রতিরোধক এবং ইংরেজিতে বললে বলতে হয়Proactivetool in warding off discase। জিনসেংকে কোরিয়ানরা বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকে। এর পুরো মূল সুপে দিয়ে দেয়, সিদ্ধ মূল খেতে হয়। চিবিয়ে চিবিয়ে এর নির্যাস নিতে হয়। জিনসেং দিয়েমদও তৈরি হয়। এছাড়াও জিনসেং-এর রয়েছে নানাবিধ খাদ্য উপকরণ।জিনসেং কে বলা হয় wonder herbs বা আশ্চর্য লতা। চীনে সহস্র বছর ধরে জিনসেং গাছের মূল আশ্চর্য রকম শক্তি উতপাদনকারী পথ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও এর রয়েছে নানাবিধ গুন।চীন থেকে কেউ বেড়াতে আসলে সাধারণত দেখা যায়জিনসেং ও সবুজ চা কে গিফট হিসেবে নিয়ে আসতে। সেইরকম একটা গিফটপাওয়ার পরে ভাবলাম যে এই আশ্চর্য লতার গুন কে আসলে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত নাকি এ শুধুই প্রাচীন চাইনিজ মিথ? ঘাটতে গিয়ে পেলাম নানাতথ্য। আমাদের দেশের মানুষেরা এটা সম্পর্কে কম-ই জানেন। তাই জিনসেং সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আজকের পোস্ট।জিনসেং :মুলত দুই ধরণের জিনসেং ঔষধি গুনসম্পন্ন হিসেবে পরিচিত- আমেরিকান ও এশিয়ান। এরমধ্যে এশিয়ান জিনসেং অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকরী। এই দুই ধরণেরজিনসেং কে বলা হয় প্যানাক্স জিনসেং।প্যানাক্স শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ “panacea” থেকে যার অর্থ হলো “All healer” বা সর্ব রোগের ঔষধ। জিনসেং সাদা(খোসা ছাড়ানো) ও লাল (খোসা সমেত) এই দুই রকম রূপে পাওয়া যায়। খোসাসমেত অবস্থায় এটি অধিককার্যকরী। এদের মধ্যে থাকা জিনসেনোনোসাইড নামক একটি উপাদান এর কার্যক্ষমতার জন্য দায়ী। সাইবেরিয়ান জিনসেং নামে আরেক ধরণেরগাছ আছে, যা জিনসেং বলে ভূল করা হলেও তা আসলে প্রকৃত জিনসেং না।জিনসেং ও লিংগোত্থানে অক্ষমতাঃজিনসেং এর গুনাবলীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী যা প্রমানিত তা হলে, পুরুষের লিংগোত্থানে অক্ষমতা রোধে এর ভূমিকা। University of Ulsan এবং the Korea Ginseng and Tobacco Research Institute ৪৫ জন ইরেকটাইল ডিসফাংশন (লিংগোত্থানে অক্ষম ব্যাক্তি) এর রোগীর উপর একটি পরীক্ষা চালান। তাদের কে ৮ সপ্তাহের জন্য দিনে ৩বার করে ৯০০ মিগ্রা জিনসেং খেতে দেয়া হয়, এরপর দুই সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার ৮ সপ্তাহ খেতে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে৮০% জানান যে, জিনসেং গ্রহনের সময় তাদের লিংগোত্থান সহজ হয়েছে। ২০০৭ সনে Asian Journal of Andrology এ ৬০ জন ব্যাক্তির উপর করা এবং Journal of Impotent Research এ ৯০ জন ব্যাক্তির উপর করা অনুরুপ আরো দুটি গবেষনাপ্রকাশিত হয়। ২০০২ সালের একটি গবেষনায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন যে, জিনসেং কিভাবে লিংগোত্থানে সহায়তা করে। পুরুষের যৌনাংগে corpus cavernosum নামে বিষেশ ধরণের টিস্যু থাকে। নাইট্রিক অক্সাইডের উপস্থিতিতে এই টিস্যু রক্তে পরিপূর্ণ হয়ে লিংগোত্থান ঘটায়। জিনসেং সরাসরি দেহে নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমান বাড়িয়ে লিংগোত্থানে সহায়তা করে।জিনসেং ও দ্রুত বীর্যস্খলনযদিও কাচা জিনসেং এর মূল এই রোগে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানা যায়না তবে জিনসেংএর তৈরী একটি ক্রীম (ss cream) পুরুষদের দ্রুত বীর্যস্খলন রোধে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার হয়ে আসছে যা মিলনের একঘন্টা আগে লিঙ্গে লাগিয়ে রেখে মিলনের আগে ধুয়ে ফেলতে হয়। Journal of Urology তে ২০০০ সনে প্রকাশিত একটিগবেষনা অনুযায়ী এটি বীর্যস্খলনের সময় কাল কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে বাড়ায়। আসলে, জিনসেং শব্দটাই এসছে চাইনিজ শব্দ “রেনসেং” থেকে। “রেন” অর্থ পুরুষ ও “সেন” অর্থ “পা”, যৌনতা বৃদ্ধিতে এর অনন্য অবদান এর জন্যই এর এইরকম নাম (অবশ্য এটি দেখতেও পা সহ মানুষের মত)।এ বিষয়ে আরও জানতে পুরুষের দুর্বলতা – সমাধান নিনজিনসেং ও Cognitive function:cognitive function বলতে বুঝায় বিভিন্ন মানসিক ক্ষমতা যেমন মনযোগ, স্মৃতিশক্তি, কথা শোনার সাথে সাথে বুঝতে পারার ক্ষমতা,কল্পনাশক্তি, শেখার ক্ষমতা, বিচারবুদ্ধি, চিন্তা শক্তি ও সমস্যা সমাধান করে কোন একটা সিদ্ধান্তে পৌছানোর ক্ষমতা। সোজা ভাষায় বলতে গেলে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি। জিনসেং স্নায়ুতন্তের উপর সরাসরি কাজ করে মানসিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ২০০৫ সনে Journal of Psychopharmacology তে প্রকাশিত গবেষনা অনুযায়ী ৩০ জন সুস্বাস্থ্যবান যুবার উপর গবেষনা করে দেখা গিয়েছে যে জিনসেং গ্রহন তাদের পরীক্ষার সময় পড়া মনে রাখার ব্যাপারে পজিটিভ ভূমিকা রেখেছিল। একই জার্নালে ২০০০ সালে করাএকটি গবেষনা, যুক্তরাজ্যের Cognitive Drug Research Ltd কর্তৃক৬৪ জন ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা এবং চীনের Zhejiang College কর্তৃক ৩৫৮ ব্যাক্তির উপর করা একটি গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মধ্যবয়স্ক ও বৃদ্ধ ব্যাক্তির স্মরণশক্তি ও সার্বিক বৃদ্ধিতেও সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। ২০০৫ সনে Annalsof Neurology তে প্রকাশিতইদুরের উপর করা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং মস্তিষ্কের কোষ বিনষ্টকারী রোগ যা স্মৃতিশক্তি বিনষ্ট করে (যেমন পারকিন্সন ডিজিজ, হান্টিংটন ডিজিজ ইত্যাদি) সেসব প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।জিনসেং ও ডায়াবেটিস২০০৮ সনে ১৯ জন টাইপ ২ ডায়বেটিস এর রোগীর উপরকরা গবেষনা অনুযায়ী জিনসেং টাইপ ২ ডায়বেটিস ম্যানেজমেন্টে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে।জিনসেং ও কোলেস্টেরলPharmacological Researchএ ২০০৩ সালে প্রকাশিত একটি গবেষনা অনুযায়ী, দিনে ৬ মিগ্রা হারে ৮ সপ্তাহ জিনসেং গ্রহণ খারাপ কোলেস্টেরল যেমন-total cholesterol (TC), triglyceride (TG) ও low density lipoprotein (LDL) এর মাত্রা কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরল (High DensityLipoprotein বা HDL) এর মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে।জিনসেং ও ফুসফুসের রোগঃChronic Obstructive Pulmonary Disease (COPD) হচ্ছে ফুসফুসের অন্যতম কমন রোগ। এই রোগীদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকে কফ থাকে ওকারো কারো ফুসফুসের ক্ষয় ঘটে। Archive of Chest Disease এ ২০০২ সনে প্রকাশিত ৯২ জন রোগীর উপর করা গবেষনা অনুযায়ী ১০০মিগ্রা ডোজে ৩ মাস জিনসেং গ্রহণে সার্বিক ভাবে COPD এর অবস্থার উন্নতি হয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।জিনসেং ও ত্বকঃজিনসেং বিভিন্ন এন্টি-এজিং ক্রীম ও স্ট্রেচ মার্ক ক্রীম এ ব্যবহৃত হয়। এইসব ক্রীম ত্বকেরকোলাজেন এর উপর কাজ করে ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধ করে ও গর্ভবতীনারীদের পেটের ত্বক স্ফীতির কারণে তৈরী ফাটা দাগ নিরসন করে। তবে এটির জন্য জিনসেং এর ভূমিকা কতটুকু ও ক্রীমে থাকা অন্যান্য উপাদানের ভূমিকা কতটুকু তা জানা যায়নি।জিনসেং ও ক্যান্সারজিনসেং ক্যান্সার নিরাময় করতে না পারলেওআমেরিকার ম্যায়ো ক্লিনিক ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা বলছেন, ক্যান্সারে ভুগছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা কাটাতে জিনসেং সহায়ক। ৩৪০ রোগী নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, ৮ সপ্তাহ ধরে উচ্চমাত্রার জিনসেং ক্যাপসুল সেবন করেছেন এমন রোগীদের দুর্বলতা অন্যান্য পদ্ধতির চিকিৎসা গ্রহণকারীদের তুলনায় অনেক কমেছে।জিনসেং ও রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থাএকটি গবেষনায় ২২৭ ব্যক্তির উপর

Total Pageviews