বাংলার রাম রহিম: দরজা বন্ধকরেই চলে নারীদের থেরাপি!

সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগেএবার শেরপুরের স্বঘোষিত ব্রহ্মচারী শান্তানন্দ ওরফে প্রবীর চৌধুরীর স্থাপিত ক্রিয়াযোগ উপাসনালয় তালাবন্ধকরে দিয়েছে বাড়ীর মালিকসহ সর্বস্তরের হিন্দু জনসাধারণ।মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে শহরের কয়েকশত হিন্দু পরিবার নয়আনী বাজার এলাকার পোদ্দার কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় অবস্থিত ওই উপাসনালয়টি ঘেরাও করেতালাবদ্ধ করে দেয়।এ সময় কমপ্লেক্সের মালিক রাম পোদ্দার, জেলা পুরোহিত কল্যাণ পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় কয়েকশত হিন্দু ধর্মাবলম্বী উপস্থিত ছিলেন।পোদ্দার কমপ্লেক্সের মালিক, দিলিপ পোদ্দার ও রাম পোদ্দার বলেন, নিজেকে ব্রহ্মচারী দাবি করে চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা প্রবীর চৌধুরী ওরফে শান্তানন্দ ২০১৬ সালে আমাদের বাড়ীতে এসে কিছুদিনের জন্য আশ্রয় চান। আমার বৃদ্ধ মা’র অনুরোধে আমরা চতুর্থ তলায় টিনসেটের ছাউনিতে তাকে থাকার ব্যবস্থা করি।কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই থলের বিড়াল বের হয়ে আসে। শান্তানন্দ আমাদের মতামতনা নিয়ে সেখানে ক্রিয়াযোগ উপাসনালয় খুলে বসে এবং নারীদের ঘরের দরজা বন্ধ করে থেরাপি দেওয়া শুরু করে।এ ছাড়াও অর্থের বিনিময়ে তাবিজ-কবজ, নানা ধরণের পাথর দেওয়াসহ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শুরু করেন। কিছুদিন আগে তিনি ৩-৪টি বিষধর সাপ এনে রাতের আধারে সেই সাপ দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে সে আর্থিক সুবিধা নিত।এসব কাজে শহরের চিহ্নিত কিছু মাদকসেবীও সন্ত্রাসীকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে ক্যাডার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেশান্তানন্দ। এমনকি তাঁর শিষ্য এক সুন্দরী নারীর বাড়ীতে রাত যাপন শুরু করেন তিনি।এ ঘটনার প্রেক্ষিতে দুইমাস আগে তাঁকে কমপ্লেক্স ছেড়ে দিতে বলা হয়। বিষয়টি স্থানীয় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে জানানো হয়।এতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে শান্তানন্দ তাঁর ১০জন শিষ্যের নাম দিয়ে সম্পত্তি দখল করতে আদালতে একটি নালিশী মামলা করে এবং ক্যাডারদের মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা দাবি করে। রাজি না হলে সে ফেসবুকেফেক আইডি দিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রচারণা চালাতে থাকে।এমনকি এখনও পর্যন্ত জেলা পূজা পরিষদ ও পুরোহিত কল্যাণ পরিষদকে নিয়ে মিথ্যা ওমনগড়া বক্তব্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি জটিল হওয়ার প্রেক্ষিতে হিন্দু সম্প্রদায়েরসর্বস্তরের মানুষ এসে বিতর্কিত ও স্বঘোষিত ব্রহ্মচারীর ঘরে তালা দিয়েছে।অথচ যারা মামলার বাদী তারা অনেকেই এঘটনা জানেনইনা। তিনি আরো বলেন, প্রবীর ওরফে শান্তানন্দ কোথা থেকে এসেছে আমরা তা জানিনা। সে দীর্ঘদিন ধরে শেরপুরে নানান ধরনের অপকর্ম করে আসছে। বিক্ষুব্ধ হয়ে সচেতন হিন্দু জনসাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে তথাকথিত ভন্ডাশ্রমে তালা দিয়েছে।এ ব্যাপারে প্রবীর চৌধুরী ওরফে শান্তানন্দ সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। কিছু সংখ্যক লোক বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এখানে স্থাপিত মন্দির উচ্ছেদের চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা আদালতে মামলা করেছি। আদালত ফয়সালা দেবে। আমার ভক্তদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।

Total Pageviews