জান্নাত সম্পর্কে অজানা গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জেনে নিন

জান্নাত (আরবি: ﺟﻨّﺔ) হল ইসলামিক পরিভাষা
অনুযায়ী, পার্থিব জীবনে যে সকল মুসলিম
আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলবে এবং
পরকালীন হিসাবে যার পাপের চেয়ে
পুণ্যের পাল্লা ভারী হবে ও আল্লাহর
সন্তুষ্টি লাভ করবে তাদের জন্য আল্লাহ যে
সকল স্বর্গ প্রস্তুত রেখেছেন।এটি একটি আরবি
শব্দ, যার শাব্দিক অর্থ হল “বাগান” বা “উদ্যান”|
প্রচলিত বাংলা ভাষায় একে বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই বেহেশত বলা হয়ে থাকে।
জান্নাত সম্পর্কে অজানা তথ্য

১) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম- এর উম্মতের মধ্য মধ্য থেকে ৭০
হাজার ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে
যাবে।- [আহমদ, তিরমিজী, ইবনে মাজাহ- আবু
ওমামা (রা.)]
২) যারা রাতে আরামের বিছানা থেকে
নিজেদের পার্শ্বদেশকে দূরে রেখেছিল,
এমন অল্প সংখ্যক লোক বিনা হিসেবে
জান্নাতে প্রবেশ করবে। অবশিষ্ট সকল মানুষ
হতে হিসেব নেয়ার নির্দেশ করা হবে।
[বায়হাকি- আসমা (রা.)]
৩) জান্নাতে জান্নাতবাসীরা প্রতি
জুমাবারে বাজারে মিলিত হবে এবং
জান্নাতে জান্নাতবাসীদের রূপ-সৌন্দর্য
বৃদ্ধি পাবে। [মুসলিম- আনাস রা.)]
৪) জান্নাতের স্তর হবে ১০০টি এবং
জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তর জান্নাতুল
ফেরদাউস। যখন তোমরা আল্লাহর কাছে
জান্নাত চাইবে তখন জান্নাতুল ফেরদাউস
চাইবে। [তিরমিজী ওবাই ইবনে সামেত
(রা.)]
৫) জান্নাত সমস্ত পৃথিবী থেকে উত্তম।
(মুয়াত্তা- আবু হুরাইরা (রা.)
৬) জান্নাতবাসীনী কোন নারী (হুর) যদি
পৃথিবীর দিকে উঁকি দেয়, তবে গোটা জগত
আলোকিত হয়ে যাবে এবং আসমান জমীনের
মধ্যবর্তী স্থান সুগন্ধিতে মোহিত হয়ে
যাবে। তাদের মাথার উরনাও গোটা
দুনিয়া ও তার সম্পদরাশি থেকে উত্তম।
[বুখারী- আনাস (রা.)]
৭) জান্নাতে একটি চাবুক রাখার পরিমাণ
জায়গা গোটা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু
আছে তা থেকে উত্তম। [মুয়াত্তা- আবু হুরাইরা
(রা.)]
৮) জান্নাতের একটি গাছের নিচের ছায়ায়
কোন সাওয়ারী যদি ১০০ বছরও সাওয়ার করে
তবুও তার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে
না। [বুখারী, মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
৯) জান্নাতে মুক্তা দিয়ে তৈরী ৬০ মাইল
লম্বা একটি তাঁবু থাকবে। জান্নাতের পাত্র
ও সামগ্রী হবে সোনা ও রুপার। [বুখারী,
মুসলিম আবু মুসা (রা.)]
১০) পূর্ণিমা চাঁদের মতো রূপ ধারণ করে
তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ক) তাদের
অন্তরে কোন্দল ও হিংসা বিদ্বেষ থাকবে
না। (খ) তারা কখনো রোগাক্রান্ত হবে না।
(গ) তাদের পেশাব পায়খানা হবে না। (ঘ)
তারা থুথু ফেলবে না। (ঙ) তাদের নাক দিয়ে
ময়লা ঝরবে না। (চ) তাদের চিরুনী হবে
সোনার চিরুনী। (ছ) তাদের ধুনীর জ্বালানী
হবে আগরের। (জ) তাদের গায়ের গন্ধ হবে
কস্তুরির মতো সুগন্ধি। (ঝ) তাদের স্বভাব হবে
এক ব্যক্তির ন্যায়। (ঞ) তাদের শাররীক গঠন
হবে (আদী পিতা) আদম (আ:) এর ন্যয়। [বুখারী,
মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
১১) জান্নাতীদের খাবারগুলো ঢেকুর এবং
মিশকঘ্রাণযুক্ত ঘর্ম দ্বারা নি:শেষ হয়ে
যাবে। [বুখারী, মুসলিমযাবির (রা.)]
১২) জান্নাতীরা সুখে শান্তিতে
স্বাচ্ছন্দ্যে ডুবে থাকবে। হতাসা দুশ্চিন্তা
ও দুর্ভাবনা থাকবে না। পোশাক পরিচ্ছেদ
ময়লা হবে না, পুরাতন হবে না। তাদের
যৌবনও নিঃশেষ হবে না। [মুসলিম আবু
হুরায়রা (রা.)]
১৩) জান্নাতবাসীরা সব সময় জীবিত
থাকবে। কখনো মৃত্যুবরণ করবে না। সব সময় যুবক
থাকবে বৃদ্ধ হবে না। [মুসলিম আবু সাঈদ (রা.)]
১৪) জান্নাতে (এমন) এক দল প্রবেশ করবে,
যাদের অন্তর হবে পাখিদের অন্তরের মতো।
[মুসলিম আবু হুরায়রা (রা.)]
১৫) জান্নাতবাসীদের প্রতি আল্লাহ বলবেন,
আমি তোমাদের উপর সন্তুষ্টি দান করেছি,
তোমাদের উপর আর কখনো অসন্তুষ্ট হবো না।
[বুখারী, মুসলিমআবু সাঈদ (রা.)]
১৬) জান্নাতের নহরে পরিণত হবে- সায়হান,
জায়হান, ফোরাত ও নীল নদী। [মুসলিম – আবু
হুরায়রা (রা.)]
১৭) জান্নাতে বান্দার আশা আকাঙ্খার
দ্বিগুণ দেয়া হবে। [মুসলিম – আবু হুরায়রা (রা.)
]
১৮) জান্নাতের দরওয়াজা ৪০ বছরের দুরত্বে
সমান, এমন এক দিন আসবে যে তাও ভরপুর হয়ে
যাবে। [মুসলিম-উতবা ইবনে খাজওয়ান (রা.)]
১৯) জান্নাতের ইট স্বর্ণ ও রোপ্য দ্বারা
তৈরী। কঙ্কর হলো মনি মুক্তা, আর মসল্লা হলো
সুগন্ধীময় কস্তুরী। [তিরমিজী – আবু হুরায়রা
(রা.)]
২০) জান্নাতের সকল গাছের কা- হবে
সোনার। [তিরমিজী – আবু হুরায়রা (রা.)]
২১) জান্নাতের ১০০ টি স্তর আছে, দু’স্তরের
মধ্যে ব্যবধান শত বছরের। [(তিরমিজী – আবু
হুরায়রা (রা.)]
২২) জান্নাতের ১০০ স্তরের যে কো এক স্তরে
সারা বিশ্বের সকল লোক একত্রিত হলেও তা
যথেষ্ট হবে। [তিরমিজী আবু সাঈদ (রা.)]
২৩) জান্নাতের উচ্চ বিছানা (সুরুরুম মারফুআ)
আসমান জমীনর মধ্যবর্তী ব্যবধানের পরিমাণ-
৫০০ শত বছরের পথ। [তিরমিজী আবু সাঈদ (রা.)]
২৪) জান্নাত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ১০০ পুরুষের
শক্তি দান করা হবে। [(তিরমিজ – আবু হুরায়রা
(রা.)]
২৫) জান্নাতবাসীগণ কেশবিহীন
দাড়িবিহীন হবে। তাদের চোক সুরমায়িত
হবে। [তিরমিজ – আবু হুরায়রা (রা.)]
২৬) জান্নাতবাসীগণ ৩০ বা ৩৩ বছর বয়সীর
মতো জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিজী,
ময়াজ ইবনে জাবাল (রা.)]
২৭) জান্নাতে অবস্থিত কাওসার এর পানি দুধ
অপেক্ষা অধিক সাদা এবং মধুর চেয়েও
মিষ্টি হবে। [তিরমিজীআসান (রা.)]
২৮) জান্নাতবাসী উট ও ঘোড়া চাইলে
দুটোই পাবে এবং তা ইচ্ছেমতো দ্রুত উড়িয়ে
নিয়ে যাবে। তাতে তুমি সে সব জিনিস
পাবে যা কিছু তোমার মন চাইবে এবং
তোমার নয়ন জুড়াবে। [তিরমিজী-আবু
বুরাইদা (রা.)]
২৯) জান্নাতবাসীদের ১২০ কাতার হবে।
তার মধ্যে ৮০ কাতার হবে এ উম্মতের।

Total Pageviews