আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) মিরাজ রাতের কিছু কথা

একদিন হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বিবিআয়েশা (রাঃ) কে ডেকে জিজ্ঞেসকরলেন, হে আয়েশা, আজকে আমিঅনেক খুশি, তুমি আমার কাছে যাচাইবে তাই দেব, বল তুমি কি চাও?হযরত আয়েশা (রাঃ) চিন্তায় পড়ে গেলেন, হঠাৎ করে তিনি এমন কি চাইবেন, আর যা মন চায় তা তো চাইতে পারেন না! যদি কোন ভুল কিছু চেয়ে বসেন, নবীজী যদি কষ্ট পেয়ে যান? এমন অনেক প্রশ্নই মনে জাগতে লাগলো! আয়েশা (রাঃ) নবীজী কে বললেন, আমি কি আব্বুর কাছ থেকে কিছু পরামর্শ নিতে পারি?.নবীজী বললেন, ঠিক আছে তুমিপরামর্শ নিয়েই আমার কাছে চাও।আয়েশা (রাঃ) উনির আব্বু হযরতআবু বকর (রাঃ) এর কাছে পরামর্শচাইলেন।.আবু বকর (রাঃ) বললেন, যখন কিছু চাইবেই,তাহলে তুমি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কাছে, মিরাজের রাতে আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীন এর সাথে হইছে এমন কোন গোপন কথা জানতে চাও।আর কথা দাও নবীজী যা বলবেন তাসর্বপ্রথম আমাকে জানাবে।.আয়েশা (রাঃ) নবীজী (সাঃ) এর কাছেগিয়ে মিরাজের রাতের কোন এক গোপন কথাজানতে চাইলেন, যা এখনও কাউকে বলেন নি। মুহাম্মাদ (সাঃ) মুচকি হেসে দিলেন, বললেন বলে দিলে আর গোপন থাকে কি করে! একমাত্র আবুবকর ই পারেন এমন বিচক্ষণ প্রশ্ন করতে।.মুহাম্মাদ (সাঃ) বলতে লাগলেন, হেআয়েশা আল্লাহ আমাকে মিরাজেররাতে বলেছেন, “হে মুহাম্মাদ (সাঃ) তোমার উম্মাতের মধ্যে যদি কেউ, কারো ভাংঙা যাওয়া মন জোড়া লাগিয়ে দেয় তাহলে আমি তাহাকে বিনা হিসাবে জান্নাতে পৌঁছে দেব।(সুবাহানাল্লাহ).প্রতুশ্রুতি মত, আয়েশা (রাঃ) ইনারআব্বু হযরত আবুবকর (রাঃ) এর কাছেএসে নবীজীর বলে দেওয়া এই কথাগুলো বললেন।.শুনে আবুবকর (রাঃ) কাঁদতে শুরু করলেন। আয়েশা (রাঃ) আশ্চর্যহয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আব্বু আপনিতো কত ভাংঙা যাওয়া মন জোড়ালাগিয়েছেন, আপনার তো সোজাজান্নাতে যাওয়ার কথা কাঁদছেন কেন?.আবুবকর (রাঃ) বললেন, আয়েশা এইকথাটার উল্টা চিন্তা করে দেখো, কারোভাঙ্গা মন জোড়া লাগালে যেমন আল্লাহ সোজা জান্নাতে দিবেন, কারো মন ভাঙলে ও আল্লাহ যদি সোজাজাহান্নামে দিয়ে দেন, আমি না জানিনিজের অজান্তে কতজনের মন ভেঙেছি। আল্লাহ যদি আমাকেজাহান্নামে দিয়ে দেন, সেই চিন্তায়আমি কাদতেছি।(সুবাহানাল্লাহ).এই হলো আমাদের ইসলাম, দুনিয়ায় থেকেজান্নাতের সুসংবাদ পাওয়ার পরেও এইভাবে চিন্তা করেন। এইভাবে ইসলাম আমাদেরকে শিক্ষা দেয়, কাউকে কষ্ট নাদিতে, মানুষের কষ্টে পাশে দাড়াতে।.মুহাম্মাদ (সাঃ) আরো বলেছেন, যদিতুমি গোস্ত রান্না করতে চাও, তাহলেএক গ্লাস পানি বেশি দিয়ে দাও, যাতেতোমার গরীব প্রতিবেশীকে একটুদিতে পারো। আর যদি না দিতেচাও, তাহলে এমন সময় রান্না করবে,যখন প্রতিবেশীর বাচ্চা ঘুমিয়ে থাকে,গোস্তের ঘ্রান পেয়ে বাবা-মাকে গোস্তখাওয়ার কথা না বলে, গরীব বাবা-মা,গোস্ত কিনে খাওয়াতে পারবে না, মনেঅনেক কষ্ট পাবে।.এইভাবে ইসলাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছে, মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাদের কে শিক্ষা দিয়ে গেছেন।.মানুষের মন না ভাঙতে, মানুষকে কষ্টনা দিতে।.আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীন আমাদেরকে মানুষের কষ্টে পাশে দাড়ানোর, মানুষকে কষ্ট দেওয়াথেকে, মানুষের ভেঙে যাওয়া মনজোড়া লাগাতে, অন্যের কষ্ট ভাগভাগি করতে তাওফিক দান করুন।

Total Pageviews