Home »
খাদ্য ও স্বাস্থ্য
» সয়াবিন তেল থেকে ইস্পাতের ২০০ গুণ শক্তিশালী গ্রাফিন তৈরি
সয়াবিন তেল থেকে ইস্পাতের ২০০ গুণ শক্তিশালী গ্রাফিন তৈরি
গবেষকগণ নিত্যদিনের ব্যবহার্য ভোজ্য তেল থেকে সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে ইস্পাতের চেয়ে ২০০ গুণ শক্তিশালী একটি বস্তু গ্রাফিন তৈরি করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন। গ্রাফিন কার্বনের পরমাণুর একস্তর বিশিষ্ট একটি রূপ, যা উদ্ভাবনের জন্য ২০১০ সালে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয়।গ্রাফিনের অন্যন্য সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো এটি ইস্পাতের চেয়ে ২০০ গুণ শক্তিশালী, হীরার চেয়েও এটি শক্ত এবং অতীব নমনীয়। বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি এমনকি অতিপরিবাহী পদার্থেও পরিণত হতে পারে যার ফলে কোনোরকমের রোধ ব্যাতীরেকে বিদ্যুৎ পরিবহনকরে।এর অর্থ হচ্ছে, এই বস্তুটি ব্যবহার করেআরো কার্যকর ভাবে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশ, সৌর বিদ্যুৎকোষ বানানো সম্ভব। এটি ভবিষ্যতে চিকিৎসাক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।গত বছর এটি গবেষণায় দেখা যায় গ্রাফিনের মাধ্যমে আরো দক্ষ ব্যাটারিতৈরি করা যায় এবং এটিকে বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে ফিল্টার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।গ্রাফিনের এতবিধ গুণাগুণ থাকা সত্ত্বেও এটিকে এতদিন সফলভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছিলো না কেননা এর উৎপাদনে বিপুল পরিমাণ খরচ হয়। এর আগে এটি কেবল তৈরি করা যেন অত্যন্ত বিশুদ্ধ কাঁচামাল হতে এবং অতিউচ্চ তাপে, বিপুল পরিমাণ শক্তি খরচ করার মাধ্যমে। সহজে এবং কম খরচে নির্মাণ করা না গেলে কোনো বস্তুকেই দৈনন্দিন প্রয়োজনে কাজে লাগানো সম্ভব নয়।তবে, সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানী স্বাভাবিক কক্ষ তাপমাত্রার পরিবেশে খুবই সস্তা, সয়াবিন তেল থেকে গ্রাফিন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। ‘এই পদ্ধতিতে গ্রাফিন উৎপাদন দ্রুত, সহজ, নিরাপদ, বিপুল মাত্রায় উৎপাদনযোগ্য এবং যন্ত্র-বান্ধব।’ বলছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসআইআরও এর গবেষক ঝাও জুন হান। তিনিযোগ করেন, ‘আমাদের অভিনব প্রযুক্তি গ্রাফিন উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনবে এবং নতুন নতুন প্রয়োগের ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে আশা করা যাচ্ছে’।গবেষণা দলটি নতুন এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘গ্রাফএয়ার’ প্রযুক্তি। এই পদ্ধতিতে সয়াবিন তেলতে একটি নলাকারেরচুল্লীতে ত্রিশ মিনিট উত্তপ্ত করা হয় যার ফলে এটি কার্বনের বিল্ডিং ব্লকে পরিণত হয়। এই কার্বনকে এর পর খুব দ্রুততায় একটি নিকেলের পাতের উপর শীতল করা হয় যেখানে একটি একটি চতুষ্কোন গ্রাফিনে ছড়িয়ে যায় যা কেবল এক ন্যানোমিটার (মানুষের চুলের ৮০ হাজার ভাগের একভাগ পুরুত্ব) পুরু।এই পদ্ধতি যে কেবল অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় সাশ্রয়ী ও সহজ তাই নয় এতে সময়ও তুলনামূলক কম ব্যয় হয়। তথ্যসূত্র: সাইন্স এ্যালার