বাংলাদেশের দক্ষিণে যেখানে সুন্দরবন শেষ,সেখান থেকেই শুরু সমুদ্র যাত্রা। এ যাত্রায় আরো ১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে গেলেই দেখা মিলে নীল জলরাশির বিস্তীর্ণ রাজ্য- যার নাম সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড। এর অর্থ যার কোনো তল নেই। বঙ্গোপসাগরের ১৭৩৮০০ হেক্টর এলাকা নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত এলাকা এই ‘সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড’।

অনেকেরই হয়তো জানা নেই বঙ্গোপসাগরের এই অঞ্চলটি পৃথিবীর ১১তম গভীর সমুদ্রখাদ। যা সৃষ্টি হয়েছিল এক লাখ ২৫ হাজার বছর আগে। সুন্দরবনের দুবলার চরের দক্ষিণাঞ্চলে ক্রমশ এগিয়ে গেলে ১ হাজার ৭৩৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকার দীর্ঘ উপত্যকাটি। তিমি, ডলফিন, হাঙ্গর ও কচ্ছপের প্রধান প্রজনন ক্ষেত্র।
বঙ্গোপসাগরের গভীরে অবস্থিত জায়গাটির সংক্ষিপ্ত ইংরেজি ‘SONG’। যাকে বৃহৎ করলে দাঁড়ায় ‘Swatch of No Ground’ অর্থাৎ ‘যার কোন তল নেই’। সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড হচ্ছে ১৪ কিলোমিটারব্যাপী বঙ্গোপসাগরের তলায় একটি গভীর উপত্যকা বা মেরিন ভ্যালি। একে আন্ডার ওয়াটার ক্যানিয়নও বলা হয়।

প্রায় ৩ হাজার ৮০০ বর্গ কিলোমিটার এরিয়াজুড়ে এটি বিস্তৃত। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে এটি বিশ্বের সেরা ১১টি গভীর খাদ বা ক্যানিয়ন এর মাঝে অন্যতম। অনেকে এটিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গভীর খাদও বলে থাকেন। ধারণা করা হয়, আজ থেকে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার বছর আগে এই গিরিখাতের সৃষ্টি। বিজ্ঞানীদের মতে, এটি একটি সামুদ্রিক অভয়ারণ্য। বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর প্রায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮০০ হেক্টর এলাকা নিয়ে এই স্থানটিকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে।

যেভাবে যাবেন :
সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড মংলা/ সুন্দরবন এর দুবলার চর/সোনারচর থেকে প্রায় ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঢাকা থেকে সরাসরি মংলা। মংলা থেকে প্রতিদিনই মাছ ধরার ট্রলার যায় সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে। জেলেদের সাথে কথা বলে উঠে পড়বেন যেকোন একটি ট্রলারে। রাতে মাছ ধরার জন্য ট্রলারগুলো সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। বিস্তারিত জেনেই ট্রলারে চড়বেন। এছাড়া মংলা বন্দরে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন, যদি জাহাজে করে যাবার কোন সৌভাগ্য এবং সুযোগ মিলে কিনা।
Swatch of No Ground HD Photos









