Plantago ovata নামক উদ্ভিদের বীজ হচ্ছে ইসুবগুল। একে ইসুবগুলের ভুষিও বলা হয় এবং এটি জলগ্রাহি। ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানে এই উদ্ভিদের চাষ করা হয়। ইসুবগুলে ৭০% দ্রবণীয় এবং ৩০% অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে। ইসুবগুলের ভুষি শুধু পরিপাকতন্ত্রের জন্যই উপকারী নয় এর আরো অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। আজ তাহলে ইসুবগুলের ভুষির সেই উপকারিতাগুলোর কথাই জেনে নিই চলুন।
১। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
ইসুবগুলের ভুষির দ্রবণীয় ফাইবারের পানি শোষণের প্রকৃতির জন্যই মল নরম হতে সাহায্য করে। ইসুবগুলের ভুষির অদ্রবণীয় ফাইবার মলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ২ চামচ ইসুবগুলের ভুষি ১ গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করুন প্রতিদিন ঘুমুতে যাওয়ার আগে।
২। ডায়রিয়া সারায়
এটি বিশ্বাস করা কঠিন যে ইসুবগুল একই সাথে পরিপাকের দুটি ভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। ইসুবগুলের দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের পানি শোষণ করে ফুলে উঠে এবং তরল মলকে আবদ্ধ করে শক্ত করে ফেলে। ২ চামচ ইসুবগুল ৩ চামচ দইয়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার পর খান দিনে দুইবার করে। দইয়ের প্রোবায়োটিক পাকস্থলীর ইনফেকশন সারাতে সাহায্য করে।
৩। ওজন কমায়
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা হচ্ছে ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। ইসুবগুল পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। অন্ত্র পরিস্কারেও সাহায্য করে ইসুবগুল। ওজন হ্রাসের সময় চর্বি পোড়ানোর প্রক্রিয়ায় শরীরে অনেক বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয়। হঠাৎ করে কাঁচা খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে তা পাকস্থলীর জন্য বেশ ভারী হয়ে যায় তাই কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফাঁপার সমস্যা তৈরি করে। সুস্থতার জন্য এই বর্জ্য পদার্থগুলো শরীর থেকে বাহির হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। ইসুবগুল পাকস্থলী পরিষ্কার করতে সাহায্য করে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়ার মাধ্যমে। প্রতিদিন সকালে অথবা খাওয়ার পূর্বে কুসুম গরম পানিতে ইসুবগুল ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে পেট ভরার অনুভূতি হয় এবং অন্য খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমায়।
৪। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
ইসুবগুলের দ্রবণীয় ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরল কমতে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রে ফ্যাট ও অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের সাথে জেল গঠন করে বর্জ্যের সাথে বের হয়ে যায়। অন্ত্রের দেয়াল যাতে ফ্যাট শোষণ করতে না পারে তাতে সাহায্য করে ইসুবগুল।
এছাড়াও ডায়াবেটিস, পাইলস ও ফিশারের রোগীদের জন্য উপকারী ইসুবগুলের ভুষি। এসিডিটির সমস্যা সমাধানে এবং হজমক্রিয়ার উন্নতিতেও সাহায্য করে ইসুবগুল।
সাবধানতা :
যেকোন খাবারই বেশি পরিমাণে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই উপকারী ইসুবগুলের ও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আর তা হল –
- কখনো কখনো এটি পাকস্থলীতে টান সৃষ্টি করতে পারে। তাই এমন ক্ষেত্রে ইসুবগুল খাওয়া বন্ধ করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
- যদি আপনার এপেন্ডিসাইটিস ও স্টোমাক ব্লকেজের মত স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে তাহলে ইসুবগুল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন
- ইসুবগুল অনেকক্ষণ আগে ভিজিয়ে না রেখে সাথে সাথে ভিজিয়ে পান করুন