সেদিন ছিল সোমবার। তমা অার রিফাতের দেখা করার কথা ছিল। এবার যদি তারা দেখা করে তাহলে সংখ্যাটা গিয়ে দাড়াবে ৪৯৭। ৪ বছরের রিলেশন।
.
.
কিন্তু তাদের দেখাটা অার হয়নি। হয়নি বললে ভুল হবে, বিধাতা হতে দেননি। কেড়ে নিয়েছেন তমাকে, রিফাতের কাছ থেকে।
তাদের পরিচিত সেই জায়গাটায় দেখা করতে প্রতিবারের মত রওনা দিয়েছিল দুজন। এবারেও রিফাতের পৌঁছাতে দেরি হয়। গিয়ে দেখে তমা নেই। ও অনেকটা অবাক হল। তমা কি তাহলে অাসেনি। না এসে অাবার চলে গিয়েছে দেরি হয়েছে বলে।
না তো, ওতো এরকম মেয়ে নয়।
সাথে সাথে ফোন দিল তমাকে।
কিন্তু ফোনটা ধরলো একটা লোক। লোকটা রিফাতকে যা বললো তাতে রিফাত ধপাস করে মাটিতে বসে পড়লো।
অাসার পথে তমার এক্সিডেন্ট হয়েছে, সে অার নেই।
.
.
রিফাত কিভাবে হাঁসপাতালে পৌছালো নিজেই জানে না। শেষ বারের মত তমাকে দেখতে গেল সে। তমার বডির সামনে দাড়িয়ে বিড়বিড় করে কি যেন বলতে থাকলো রিফাত। হয়তো কোনো জরুরি কথা যা বলার জন্য রিফাত অার তমা দেখা করতে অাসছিল।
.
.
তমার দাফন শেষে রিফাত তার মেসে চলে এল। অাশ্চর্যের কথা হল রিফাত একটুও কাঁদছে না। শুধু কেমন যেন হয়ে গেছে। কারও সাথে কথা বলছে না। মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে কি যেন বলছে। যার সাথে এতদিনের সম্পর্ক, যাকে নিয়ে এত সপ্ন, যাকে নিয়ে কাটানো কত স্মৃতি, সেই অাজকে নেই। সবকিছু এক নিমিষেই শেষ।
.
.
বেশ কিছুদিন পর রিফাত একটু স্বাভাবিক হল। তবে তমার অকাল বিদায়ে তাকে একটু বেশিই নাড়িয়ে দিয়েছিল। সমস্ত কিছু সে ডায়েরিতে লিখে রেখেছিল।
.
.
কিছুদিন পর রিফাতকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওর পরিবার। কিছুটা বাধ্য হয়েই গ্রামে যায় সে। প্রথমে সে রাজি না থাকলেও কেয়াকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় রিফাত।
.
.
বিয়ের প্রথম রাত বেলকুনিতেই কাটিয়ে দেয় রিফাত। পরদিন কেয়া দেখে বেলকুনিতে ইজি চেয়ারে রিফাত ঘুমিয়ে, পাশে একটা ডায়েরি। ডায়েরি টা পুরোটা পড়লো কেয়া।
তারপর রিফাতের দিকে একবার তাকালো।
ভাবতে লাগলো কিভাবে মানুষটা এখনো বেচে অাছে, যার ভিতরে এত যন্ত্রনা।
.
.
হঠাত রিফাতের ঘুম ভাঙলো। সে দেখে যে কেয়া তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে অাছে অার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কেয়ার হাতে ওর ডায়েরিটা দেখতে পেল। রিফাত এবার সবটা বুঝতে পারলো।
.
কেয়া বলে ঊঠলো : অামাকে কি একটা বার সুযোগ দেয়া যায় না?
রিফাত : তা হয় না। অামি পারবো না।
কেয়া : কেন পারবে না? পারতে তোমাকে হবেই। তমা চলে গেছে তো কি হয়েছে অামাকে ওর জায়গায় ভাবো না। অামি তোমার জীবন টাকে নতুন করে সাজিয়ে দিবো।
রিফাত : কিন্তু...
রিফাতকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কেয়া রিফাতের বুকে মাথা দিয়ে কাঁদতে লাগলো।।
.
শুরু হলো নতুন করে পথ চলা।