রক্তদানের ১০টি উপকারিতা

কখনও ভেবে দেখেছেন কি, আপনার দান করা একব্যাগ অর্থাৎ মাত্র ৩৩০মিলি রক্ত একজন মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারে! বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৪ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়।।
অনেক সময়েই নিরুপায় হয়ে এই দূষিত রক্ত গ্রহণ করে জটিল রোগে আক্রান্ত হন অনেক মানুষ, এমনকি মৃত্যুবরণও করে থাকেন।সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে কেনা রক্ত কোনও ভাবেই নিরাপদ নয়।
তাই আপনি যদি নীরোগ ও সুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে অতি অবশ্যই আপন বা পরিচিত জনদের প্রয়োজনের সময় রক্তদানে এগিয়ে আসুন। শুধু তাই নয়, মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে চাইলে দান করতে পারেন বিভিন্ন সংস্থাতেও কিংবা কারো প্রয়োজনে ।
একজন সুস্থ ও নীরোগ মানুষ প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর রক্ত দান করতে পারেন। এতে শরীরের কোনও ক্ষতি তো হয়ই না, বরং আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী এই রক্তদান। কিভাবে? চলুন, বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা যাক।
রক্তদানের উপকারিতাঃ-
১. রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কেননা রক্তদান করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্য উদ্দীপ্ত হয়। রক্তদানের ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন রক্তকণিকা জন্ম হয়ে ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। আর বছরে ৩ বার রক্তদান আপনার শরীরে লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা বাড়িয়ে তোলে ও নতুন কণিকা তৈরির হার বাড়িয়ে দেয়।
২. নিয়মিত রক্তদানকারীর হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম অনেকটাই
৩. নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে বিনা খরচে জানা যায় নিজের শরীরে বড় কোনো রোগ আছে কিনা। যেমন : হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, সিফিলিস, এইচআইভি (এইডস) ইত্যাদি।
৪. সম্প্রতি ইংল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানকারী জটিল বা দুরারোগ্য রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকেন অনেকাংশে। যেমন, নিয়মিত রক্তদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
৫. রক্তে কোলেসটোরলের উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে নিয়মিত রক্তদান।
৬. মুমূর্ষু মানুষকে রক্তদান করে আপনি পাচ্ছেন মানসিক তৃপ্তি। কারণ, এত বড় দান যা আর কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
৭. রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত পুণ্যের বা সওয়াবের কাজ। একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সমগ্র মানব জাতির জীবন বাঁচানোর মতো মহান কাজ। আমাদের সকলের ধর্মই আমাদের এই শিক্ষা দিয়ে থাকে।
৮. রক্তদানে আপনার নিজের অর্থ সাশ্রয়-ও হয়। রক্তদান কেন্দ্রের মাধ্যমে রক্ত দিলে পাঁচটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনা খরচে করে দেয়া হয় যা বাইরে করলে খরচ লাগবে প্রায় তিন হাজার টাকার মতো। সেগুলো হলো-এইচআইভি/এইডস, হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, ম্যালেরিয়া ও সিফিলিস। তাছাড়া রক্তের গ্রুপও নির্ণয় করা হয়।
৯. নিয়মিত রক্তদান Hemochromatosis প্রতিরোধ করে। শরীরে অতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতিকে Hemochromatosis বলে।
১০. স্থূল দেহী মানুষদের ক্ষেত্রেও রক্তদান অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে ওজন কমাতে।

Total Pageviews