[Supar] আমার একজন প্রেমিকা ছিলো। তার একটা পাগলামি ছিলো, গভীর রাতে ফোন দিয়ে বলবে "তোমাকে আমার দেখতে ইচ্ছাকরছে, তুমি কি একটু আসবে বাসার সামনে।

আমার একজন প্রেমিকাছিলো। তারএকটা পাগলামি ছিলো, গভীর রাতেফোন দিয়েবলবে "তোমাকে আমার দেখতে ইচ্ছাকরছে, তুমিকি একটু আসবে বাসার সামনে।" আমিওতারপাগলামি কে প্রশ্রয় দিয়ে চলেযেতাম। ওদেরবাসার প্রথম গেটের দেয়াল টপকালেইকেঁচিগেট,আর নিজেদের বাড়ী বলেই কেঁচিগেটেরসেকেন্ড চাবিটা খুব সহজেইনিজের করে নিতেপেড়েছে।যখন দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশকরতাম প্রায়ইদেখতাম কেঁচি গেট খুলে সেবাহিরে, আমি যাওয়ামাত্রই জড়িয়ে ধরে কান্না, চোখেরজলে আমারশার্টের বুকের অংশটা ভিজে যেতোপ্রায়প্রতিবারই। আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে একটাকথাই বলতো"তুমি জানো আমি বেশী দিন বাচবোনা, তবুওআমাকে এতো ভালোবাসো কেন?দেখবে এইভালোবাসা একদিন তোমাকেকাঁদাবে " আর তারএই রাতের বেলা দেখতে চাওয়ারপাগলামি টাবেড়ে যেতো যখন আকাশে চাঁদ এরআলোটা বেশী,তখন প্রায় প্রতি রাতেই এই ধরনেরপাগলামি সহ্যকরতাম।আর আমারো ভালো লাগতো,কারনআমি তাকেএলোমেলো চুলে দেখতে বেশীভালবাসতাম।এলোমেলো একমুঠ চুল কোন মতে পিছনেবেধেরেখেছে আর তার মাঝে কয়েকটাআবার মুষ্টি বন্ধীথেকে মুক্তি পেয়ে গালের পাশেঝুলে রয়েছে।চাঁদের আলোয় অদ্ভুত সুন্দর লাগতো।যেদিন বাসায় কেউ সজাগ ওইদিনবেচারি নিচেআসতে পারে না, দু তলার বারান্দায়দাঁড়িয়েথেকেই চোখ মুছতো।আমিও হেটে চলেযেতামসামনে দিয়ে।যেদিন ওর সাথে আমার শেষ দেখা ওআমাকে বলেগিয়েছিলো আমি যদি আর না ফিরিরাগ করো না,আমার কেন জেনো মনে হচ্ছে আমি আরফিরবোনা। তুমি কি পারবে ভালো থাকতেআমাকেছাড়া? না পারলে শিখে নিও। এর দুইদিন পরই ওকেহাসপাতালে রক্ত বদলানোর জন্যনিয়ে গেলেডাক্তার রা আর ছাড়ে না, ভর্তিকরিয়ে দেয়।হাসপাতালে একদিন দেখতেগিয়েছিলাম(ওর কোনএক বান্ধবীর কল্যাণে) সাহস করেকিন্তুদেখা হয়নি, মানে আমি দেখেছি ও দেখে নি,ঘুমিয়েছিলো। চোখের নিচে কালি পড়েগেছে,চেহারারচামড়াগুলো কেমন কুঁচকে গেছে, একনজরে তাকিয়েথাকা যায় না, মায়া লাগে,বড্ডমায়া বেড়েগেছে।ও যেদিন মারা যায় সে দিন ছিলোসোমবার , বাদ এ জানাজা দিয়ে যখনবাসায়ফিরছি,একটু পর পর খুব তিঞ্চা লাগছেকেমন যেন বুকশুকিয়ে আসছে,রিক্সা নিয়েছিলামবাসায় আসারজন্য, কিছুদূর এসেই ছেড়ে দেই রিক্সা।নেমেকিছুক্ষন হাটার পর দেখি পা ফেলতেপারছি নাকেমন জেনো শরীর কেপে কেপেউঠছে, কি জেনোঅজানা একটা ব্যথা অনুভব করছি।খুব কষ্ট হাটতে,তারপরও হাটছি। আরভাবছি প্রিয়মুখটা শেষ বারের মতো দেখতেপারলাম না। কিওছিলায় দেখবো,আমি তো ওর কোনআপন কেউ না,ওর পরিবারের কেউ তো চিনে নাআমাকে। কিন্তুকেউ কি কোনদিন জানবে আমরা কতোআপনছিলাম? জানবে না আর কেউকোনদিন।হাটছি আর কাঁদছি,কিন্তু মুখে কেমনএকটা হাসিলেগে আছে, রাস্তার মানুষ গুলো হাকরে তাকিয়েআছে ছেলেটা হাসে আবার একটু পর পরচোখ মুছে,পাগল নাকি? ওইদিন রাস্তাটা খুবঅচেনা মনেহচ্ছিল, চেনা রাস্তাটা ভুলে যাচ্ছিবার বার।সন্ধ্যার পর ছাদে উঠে দেখি আকাশজুড়ে একটাবিশাল চাঁদ। ছাদে পুরো শরীরটাফেলে দিয়ে ডানহাত টা মাথার নিচে বাকা করেদিয়ে বালিশবানিয়ে তাকিয়ে ছিলাম চাঁদেরদিকে। হটাৎ করেমনে হলো আর তো কেউ কোন দিনআমাকে ফোনদিয়ে বলবে না, একটু আসবে আমারবাসার সামনে?আমার না তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছাকরছে।কেউ তো আর কোনদিন আমার বুকেমাথা রেখেকাঁদতে কাঁদতে শার্ট ভিজিয়ে দিবেনা। আমি যদিওই বাসায় প্রথম গেটের দেয়াল টপকেযাই কেউ কিদাঁড়িয়ে থাকবে কেঁচি গেট খুলে। নাকেউ থাকবেনা। আচ্ছা ওই বাসায় দু তলারবারান্দায় দাঁড়িয়েথেকে কি কেউ চোখ মুছবে নিচেহেটে চলা এইছেলেটার জন্য।আজ সোমবার , অবাক করার বিষয়আজোআকাশে বড়একটা চাঁদ। আজ চার বছর এই ছেলেটারফোনে অনেকফোন আসে কিন্তু কেউ বলে না তুমিএকটু আসবে?তোমাকে দেখবো।ছাদে শুয়ে চাঁদ দেখছি।খুব ইচ্ছা হয় কার্নিশে দাঁড়িয়ে হাতদুটি ছড়িয়েদিয়ে নিজের এই দেহ টাকে হেলিয়েদেই ছয়তলারএই ছাদ থেকে। বাতাসে বাধা পেতেপেতে কোনএক সময় দেহটা মাটি ছুবে আর নিশ্বাসটা চলেযাবে। কি হয় এমন করলে?তুমি জানো আজো তোমার জন্য বড্ডমায়া লাগে,জ্যোৎস্না রাতে ফোনের দিকেতাকিয়ে থাকি এইবুঝি ফোন আসলো,এই বুঝি তুমি বলবেআসতে। আসেনা ফোন,বলো না তুমি।আচ্ছা তুমি তো আর ফিরবে না,তাহলে এতোভালবাসি কেন তোমাকে,কেন ভুলতেপারি না।পরেরজন্মে যেদিন দেখা হবেপ্রত্যেকটা প্রশ্নেরউত্তর কিন্তু তোমাকে দিতে হবে।মনে রেখো.....................নুর

Total Pageviews