পিরিয়ড সম্পর্কিত যে তথ্যগুলো অনেক মেয়েরাও জানে না !

প্রতি মাসেই মেয়েরা কয়েকদিনঅস্বস্তিতে থাকার ব্যাপারে প্রস্তুতথাকেন। এ সময় মেয়েদের জরায়ু থেকেকার্ভিক্স পার হয়ে জননেন্দ্রিয় দিয়েরক্ত নির্গত হয়। এই অবস্থার অর্থতাদের শরীর স্বাভাবিকভাবে কাজকরছে, স্বাস্থ্য ঠিক রাখতেপ্রয়োজনীয় হরমোন পাচ্ছে শরীর।—পিরিয়ড চলার সময়ে মেয়েদেরশরীরের ভিতরে এবং বাইরে কী কীপরিবর্তন হয়?নারীর পিরিয়ড তাকে প্রতি মাসেগর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে। এইঅবস্থা গড়ে ২৮ দিন পর্যন্ত থাকে। এসময়ে শরীরে এস্ট্রোজেনের মাত্রাবাড়ে। ব্রন দেখা দেয়া সহ নানা রকমবদল ঘটে। মাতৃত্বের জন্য নারীদেহকীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে সেপ্রাকৃতিক চক্র নিয়ে ৭টি অজানা বাকম জানা বিষয় থাকছে এখানে।১) পিরিয়ডের সময় চিন্তা করার ক্ষমতাকমে যায়পিরিয়ড চলার সময়ে সময়ে পেট ব্যথা,পিঠ ব্যথা, বমি বমি ভাব সবকিছুমেয়েদের চিন্তাপ্রক্রিয়ায় প্রভাবফেলে। এ সময় স্বাভাবিক চিন্তাকরার ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। ২০১৪সালে পেইন জার্নালে ছাপা একটাআর্টিকেলে বলা হয়েছে, পিরিয়ডেরসময় মেয়েদের কিছু কিছু বিষয়েমনোযোগ, মনোযোগের সময়কাল এবংদুটি কাজের মধ্যে মনোযোগ ভাগ হয়েযাওয়া ও পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ারব্যাপারটি বাধাগ্রস্ত হয়। সুতরাংবোঝা যাওয়ার কথা, পিরিয়ডের সময়মেয়েদের ব্যথা স্নায়ু ক্ষমতার বাইরে।২) পিরিয়ডের সময় গলার স্বর বদলেযেতে পারেপিরিয়ডের সময় মেয়েদের গলার স্বরওবদলে যেতে পারে। স্বরতন্ত্র এবং...নারীর জননেন্দ্রিয়ের কোষগুলি একইধরনের এবং হরমোনের কারণে তারাএকই রকম আচরণ করে। ২০১১ তে এথোলজিজার্নালে প্রকাশিত একটি লেখায়বলা হয়েছে, নারীর কণ্ঠ শুনে পুরুষেরাবুঝতে পারে তার পিরিয়ড চলছে।পুরুষদের তিনটি গ্রুপকে নারীদেরভয়েসের রেকর্ডিং শোনানোহয়েছিল। এই রেকর্ডিংগুলিতেনারীরা মাসের বিভিন্ন সময়ে একথেকে পাঁচ পর্যন্ত গুণেছে। এই আওয়াজথেকে পুরুষেরা শতকরা ৩৫ ভাগ সময়পিরিয়ড চলাকালীন আওয়াজ চিনতেপেরেছে।৩) নারীরা পিরিয়ডের সময়ও গর্ভবতীহতে পারেযেহেতু পিরিয়ডের সময় নারীদেরশারীরিক সক্রিয়তা বেশি থাকে,মনে রাখা দরকার এ সময় যৌন সম্পর্কহলে তারা গর্ভবতী হতেও পারে।আমেরিকান প্রেগন্যান্সিঅ্যাসোসিয়েশনের মতে, যাদেরপিরিয়ড ২৮ থেকে ৩০ দিন মেয়াদীতাদের গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা কম।তবে যাদের পিরিয়ড ২১ থেকে ২৪ দিনমেয়াদী তাদের গর্ভবতী হয়ে যাওয়ারসম্ভাবনা থাকে।৪) প্রতি পিরিয়ডে গড়ে এক কাপেরওকম রক্ত নিঃসৃত হয়মেয়েদের হয়ত মনে হয় শরীর থেকেরক্তের বিরাট প্রবাহ বের হয়ে যাচ্ছে,বক্স বক্স প্যাড হয়ত ব্যবহৃত হয়, কিন্তুনিঃসৃত রক্তের পরিমাণ কম। সাধারণতপ্রথম দুই দিন বেশি রক্ত নিঃসৃত হয়।নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির স্কুল অবমেডিসিনের মতে, প্রতি মাসে কয়েকচামচ থেকে বড়জোর এক কাপ পরিমাণরক্ত বের হয় শরীর থেকে। যদি ব্যবহারশুরু করার দুই ঘণ্টার কম সময়ে প্যাডসম্পূর্ণ ভিজে যায় এবং বদলানোর মতহয় তাহলে বুঝতে হবে এটিস্বাভাবিকের বাইরে এবংচিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।মেয়েদের মাসিক ২ থেকে ৭দিন পর্যন্তচলতে পারে।৫) পিরিয়ডের সময় মেয়েদের শরীরেরঅন্যান্য জায়গা দিয়েও রক্ত বের হতেপারেসাধারণত পিরিয়ডের সময় নারীদেরজরায়ু থেকে রক্ত নির্গত হয়। তবেপিরিয়ডের কারণে তাদের চোখ, নাকএবং মুখ দিয়েও রক্ত বের হতে পারে।অনেক নারীই জানেন না যে তারঋতুস্রাবটি সঠিক নিয়মে হচ্ছে নাকিহচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রয়োজন সঠিকজ্ঞান আর বান্ধবীদের মাঝেআলোচনা। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালথেকেই নারীদের এই ঋতুস্রাব হয়েথাকে। মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়েএটি একবার করে হয়ে থাকে। তবেমাসে ২-৩ বার হওয়া বা একেবারেই নাহওয়া একটি খারাপ লক্ষণ। তবে হঠাৎকরে এর স্বাভাবিক সময় পরিবর্তনহওয়াটাও খারাপ একটি লক্ষণ। এর জন্যঅবশ্যই অভিজ্ঞ কোন হোমিওডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।ঋতুস্রাবের সময়কাল : প্রায় সব নারীরইএই ঋতুস্রাব হওয়ার সময়কাল হয়ে থাকে৩-৫ দিন পর্যন্ত। কিন্তু এর স্বাভাবিকসময়কাল হল কমপক্ষে ২ দিন থেকে ৭দিন পর্যন্ত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭দিনের একটু বেশি সময় ধরে অল্প অল্পকরে রক্তস্রাব হওয়াটা স্বাভাবিকতবে যদি রক্তপ্রবাহ অনেক বেশি হয়েথাকে তাহলে তা অবশ্যইঅস্বাভাবিক।রক্তপ্রবাহের পরিমাণ : একেকজননারীর ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে এইঋতুস্রাব হয়ে থাকে। কারও অনেক কমহয়ে থাকে, কারও অনেক বেশি হয়েথাকে আবার কারও মাঝামাঝিপর্যায়ে হয়ে থাকে। স্বাভাবিকরক্তস্রাবের পরিমাণটি কেমন তাজানা দরকার।অল্প অল্প করে দিনে কয়েকবারহওয়াটা স্বাভাবিক। দিনে ৩ টা প্যাডপরিবর্তন করাটাও স্বাভাবিক। তবেমধ্যরাতে একই পরিমাণ প্যাড পরিবর্তনকরাটা অস্বাভাবিক। কেননাস্বাভাবিক নিয়মেই রাতে ঋতুস্রাবএকটু কম হয়ে থাকে অনেকেরই। কারণশারীরিক পরিশ্রমের উপরে এরপরিমাণ বাড়তে পারে, রাতে পরিশ্রমএকেবারেই হয় না বলে এর পরিমাণও কমহয়ে থাকে। ঋতুস্রাবের প্রথমকয়েকদিন এর প্রবাহ একটু বেশি থাকবেএটি স্বাভাবিক কিন্তু তাই বলে প্রতিঘন্টা বা প্রতি ২ ঘন্টায় প্যাডপরিবর্তন করাটা অস্বাভাবিক। এমনঅস্বাভাবিকতা দেখামাত্রডাক্তারের স্মরণাপন্ন হওয়া একান্তজরুরি।ঋতুস্রাব স্বাভাবিক হওয়ার কিছু লক্ষণ:_হালকা মাথাব্যথা হবে– ক্ষুধা লাগবে– শারীরিক অনুভূতি দৃঢ় হবে– খিটখিটে মেজাজ থাকবে– হালকা মাথাব্যথা হবে– মুখে ব্রণ হতে পারে– ঘুমের সমস্যা হতে পারে– মাঝে মাঝে বমি ভাব হতে পারেপরবর্তী ঋতুস্রাবের মধ্যবর্তী সময়কাল: স্বাভাবিকভাবেই জানা যায় যেবর্তমান ঋতুস্রাব থেকে পরবর্তীঋতুস্রাবের মধ্যবর্তী সময়কাল হয়েথাকে ২৮ দিন। তবে গবেষণায় উঠেএসেছে যে এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা।বর্তমান ঋতুস্রাব থেকে পরবর্তীঋতুস্রাবের মধ্যবর্তী সময়কাল ২১ দিনথেকে ৩৫ দিনের মধ্যে হওয়াটাস্বাভাবিক। তবে এই সময়কাল ২১দিনের কম এবং ৩৫ দিনের বেশিহওয়াটা অস্বাভাবিক। তবেঋতুস্রাবের ক্ষেত্রে যে কোনজটিলতায় অভিজ্ঞ ডাক্তারেরস্মরনাম্পন্ন হন।

Total Pageviews