ঐ তুই সারাদিন বাইরে বাইরে কি করছ?(আপু)
-তোমাকে কেন বলবো যা ইচ্ছা করে তাই করি...(আমি)
-কারে বলবি মানে..?আমি তোর কি হই?
-আপু
-কি আপু?
- বড় আপু...
-তাইলে এতো ভাব ধরছ কার সাথে হুম...!
-আরে আপু বুঝোনা কেন আমি তোমার একমাত্র ছোট ভাই...যাও আমার জন্য এক কাপ চা নিয়ে আসো...
-হুহ্ বুইড়া বেডার শক কত...আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আবার চা খাইতে চায়..!
-তুমি চা আনবা নাকি তাহসান ভাইয়ের কথা আম্মুকে বলে দিবো? (রাগের ইমু হপে)
-ওলে বাবালে আমার লক্ষি ভাইয়াটা কত ভাল...আমি এখনি চা নিয়ে আসতেছি...
-আপু দাঁড়াও?
-আবার কি?
-চায়ের সাথে দুটো বিস্কুটও আনিও...
-উফ্ তোর জ্বালায় আর বাঁচলামনা...
-আপু তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগতেছে...তাহসান ভাইয়া দেখলে অনেক খুশি হতো...হি হি হি
-হুম পামতো ভালই মারতে পারছ...যা হাত মুখ ধুয়ে নে, আমি চা বিস্কুট এর সাথে একটা কেকও নিয়ে আসতেছি...
.
আমার বড় আপু নিধি...সারাদিন আমাকে শাষণের উপর রাখে এবং আদরও সবচেয়ে বেশি করে...আমার থেকে বয়সে ৬ বছরের বড়...আমার আপু দেখতে অনেক সুন্দর...নিজের আপু বলে বলছিনা, আমার আপু সত্তি অনেক অনেক সুন্দর...আমার আপুকে পটানো অনেক সহজ...আমি প্রায় আপুর থেকে টাকা ধান্দা করি...আপুকে সুন্দর লাগতেছে এই কথাটা বললেই আপু গলে যায়...যার সুযোগ নিয়ে আমি আমার মানিব্যাগটাকে মোটা বানাতে থাকি...
.
আমি গল্প শুনতে অনেক ভালবাসি তাই আমার আপু আমাকে অনেক গল্প শুনায় যেমন ভুতের গল্প, বাঘের গল্প, রাজা বাদশাদের গল্প...আমি ভুতের গল্প শুনলে অনেক ভয়ে পাই...মাঝে মাঝে আমি রাত্রে ঘুমাতে দেরি করলে আপু আমাকে ভুতের ভয় দেখায়...আপু ভয় দেখালে আমার ভয় লাগার বদলে খুব হাসি পায়...
.
আমি বাসায় শুয়ে আছি কারণ পায়ে অনেক ব্যাথা...কাল আমার পরীক্ষা আর আমি পায়ে ব্যাথা নিয়ে শুয়ে আছি...আজ পাশের পাড়ার সাথে ফুটবল ম্যাচ ছিল...আমি অনেক ভালো খেলছিলাম তাই পাশের পাড়ার আবির নামের ছেলেটা আমাকে ইচ্ছে করে ল্যাঙ্গ মারে...তাতে আমার পা টা মচকে যায়...এখনতো আমি হাটতেও পারিনা ভালো করে কাল পরীক্ষা দিবো কিভাবে...মা আমাকে অনেক অনেক বকার সাথে মেরেছে...মা আমাকে কখনো মারেনি কিন্তু আজ গায়ে হাত তুলাতে আমার অনেক মন খারাপ...
কিছুক্ষণ পর আপু আমার কাছে আসলো... মা যখন আমাকে বকছিল এবং মারছিল আপু তখন একবারও আমারকে বাঁচাতে আসিনি তাই আমি মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম যে আমি আপুর সাথে আর কথা বলবোনা...
-বাবু খুব লেগেছে পায়ে তাইনা...(আপু আদর করে আমাকে বাবু বলে ডাকে)
-................
-হুম বুঝলাম বাবুটা আমার উপর রাগ করে আছে এখনো...দেখ আমিতো আর মায়ের মুখের উপর কথা বলতে পারিনা...আচ্ছা বাবু মা কি আমাদের কখনো খারাপ চায় বল...মা আগে কখনো তোর গায়ে হাত তুলেছেন...তোর পা ভাঙ্গাতে মা খুব কষ্ট পেয়েছেন কারণ কাল তোর পরীক্ষা...পরীক্ষা যদি খারাপ হয় তাহলে কি আমাদের বাবুটা উপরের ক্লাসে যেতে পারবে...তাই মা ভালোর জন্য মেরেছেন যাতে এরকম ভুল ভবিষ্যৎ এ না হয়...
প্রথমে ভাবছিলাম কথা বলবোনা কিন্তু আপুতো ঠিক কথা বলেছে...আমি যদি উপরের ক্লাসে না যাই তাহলেতো রোহান উপরের ক্লাসে চলে যাবে...তখন আমার কি হবে...আমি আপুর দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম...
.
আজ সকাল থেকে আপুর মন খারাপ...আমি সকালে কয়েকবার আপুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে কি হয়েছে..? আপু কোন উত্তর দেয়না...আম্মুর কাছে শুনেছি সকালে নাকি আপু নাস্তাও করেনি...আপু আমার সাথে কথা না বললে আমার চারপাশ অন্ধকার মনে হয়...তাই আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারে আপুর সামনে গিয়ে কান্না করতে করতে বললাম,,,
-আপু তোমার কি হয়েছে আমার সাথে কথা বলোনা কেন...জানোনা তোমার সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা...তোমার কি প্রয়োজন বলো আমাকে...তোমার টাকা লাগবে?
-আপু আমার দিকে অবাক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষণ...
-কথা বলছোনা যে?
-আমার টাকা লাগবে তুই কিভাবে বুঝলি বাবু?
-কত টাকা লাগবে তোমার?
-ইয়ে মানে দুহাজার...তুই এতো কিছু জিজ্ঞেস করছিস কেন?
-আমার কাছে দুহাজার টাকা আছে...
-তুই এতো টাকা পেলি কোথায়?
-হি হি তোমার থেকে যে টাকাগুলো ধান্দা করছি সেগুলো একটা ব্যাংকে জমিয়ে রেখেছি...
-ওরে ফাজিল...আসলে আজ তাহসানের বার্থডে...তাহসান প্রতি জন্মদিনে আমায় কত কিছু দেয় কিন্তু আমি কিছুই দিতে পারিনা তাকে...তাই আমার অনেক খারাপ লাগে...তুইতো জানছ আমি মিথ্যা বলতে পছন্দ করিনা, আর তাহসানের জন্মদিনের কথা বলে মার থেকে যে টাকা নিবো তাও সম্ভব নয়...
.
বিকেলে আপু এতো বড় একটা গিফ্ট কিনে এনে তাহসান ভাইয়ার সাথে দেখা করতে গেলো এবং যাওয়ার সময় আমাকেও সাথে করে নিয়ে গেলো...তাহসান ভাইয়া আমাকে আর আপুকে দেখে অনেক খুশি হলো...তাহসান ভাইয়া অনেক ভালো, আমাকে অনেক আদর করে...তাহসান ভাইয়ের বার্থডে কেকটা আমি কেটেছিলাম...আমি, আপু আর তাহসান ভাইয়া সেদিন অনেক ঘুরাঘুরি আর মজা করছিলাম...বিদায় নেওয়ার সময় তাহসান ভাইয়া আমাকে এতোগুলো ডেরিমিল্ক কিনে দিয়েছিল...
.
আমি এখন আর সেই ছো