আলীপুর গ্রামে রহিমের বসবাস

--ছেলেটি চোর---
---
---
-
আলীপুর গ্রামে রহিমের বসবাস।
রহিম এখন একজন ভালো ছেলে ।
রহিমের জন্মের পর তার মা মারা যায়।
মা মারা যাবার পরেই রহিমের বাবা নতুন একটি বিয়ে
করেন।
কিন্তু বিয়ে করা নতুন মা আগের মায়ের মতন ভালো
ছিলোনা।
-রহিম কোনদিন দুবেলা খেয়ে না খেয়ে মানুষ হয়েছে।
রহিমের সৎ মা রহিমকে কখনোই ভালো চোখে দেখতো
না।
রহিমকে কোনদিন আবার ক্ষেতেও দিতো না।
না ক্ষেয়ে একটা মানুষ কতদিন বাঁচবে বলুন।
-রহিম না খেতে পেয়ে চুরি করে খাওয়া শুরু করল।
-অনেক রাতে রহিম মানুষের বাড়িতে চুরি করতে শুরু করে।
-এভাবে চুরি করতে করতে একদিন রহিমকে সবাই ধরে
ফেলে। সেদিন রহিমকে তাঁরা প্রচন্ড মারে।
-গ্রামের মাত্তবরের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় রহিম কে।
-কিরে রহিম তুই চুরি করছিস কেনো। (মাত্তবর)
-আমার মা আমাকে ক্ষেতে দেই না তাই।
-তাই বলে তুই চুরি করবি।
-কোন কথা বলে না রহিম।
-রহিমের বাবা সেদিন তাঁকে বাঁচাতে মাত্তবরের কাছে
যায় নি।
-চোর ছেলেকে আর কেইবা বাঁচাতে আসবে।
-সেদিন বিচারে রহিমকে গ্রামের মাত্তবর রা মিলে
প্রচন্ড মারে।
মার খেয়ে রহিম কোনরকমে বাড়ি ফিরে আসে।
-
-তুই বাড়ির ভিতরে আসবি না। (সৎমা)
-কেনো ।
-এখানে চোরের কোন যায়গা নাই।(সৎমা)
-একগ্লাস পানি দাও, খেয়েই চলে যাবো।
-পানি নাই, এখন চলে যাতো।
-শরীরে এক ফোঁটা শক্তি নাই রহিমের।
সারাদিন কিছুই খাই নি রহিম।
এর উপরে প্রচন্ড মার খেয়েছে।
রহিম বাড়ির গেটের কাছেই যেতে পড়ে গেলো।
চলার শক্তি না থাকলে যেটা হয়।
-রহিমের বাবা তখন বাড়িতে ছিলো না।
রহিমের বাবা বাড়িতে এসে দেখে রহিম গেটের সামনে
পড়ে আছে।
রহিমের বাবা রহিমকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যায়।
-দশদিনের মাঝে রহিম সম্পুর্ন ভাবে সুস্থ হয়ে পড়ে।
-রহিম তুই আজকে থেকে আর কোন খারাপ কাজ করবি না
বাবা। (রহিমের বাবা)
-রহিম কিছু বলে না শুধু শুনে যায়।
-রহিম তোকে কালকেই কলেজে ভর্তি করিয়ে দেবো।
তোকে পড়াশোনা আবার করাবো আমি।
এতোদিন আমি অন্ধকার জগতে ছিলাম।এখন থেকে তোর
সব চাওয়া পুরন করবো।
-রহিম তার বাবার কথা শুনে অনেক খুশি হয়।
-রহিমের বাবা রহিমকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেই।
-রহিম আনন্দ মনে কলেজে যায়।
তবে একটি শব্দ রহিমকে বার বার শুনতে হয়, দেখ ওইযে
সেদিনের চোরটা কলেজে ভর্তি হয়েছে।
-রহিমের এইসব কথা শুনে অনেক কষ্ট লাগে তবুও রহিম
পড়াশোনা করে।
তাকে যে মানুষ হতে হবে।
এদের কথাই কান দিলে যে আর সে মানুষের মতন মানুষ
হতে পারবে না।
---
--
এভাবে দুই মাস যাবার পরে,
একদিন গ্রামে চুরি হয়।
--গ্রামে সেদিন চুরি হবার পরে গ্রামের সবাই রহিমকে
দোষ দেই।
প্রিয়২৪.কম
সবাই বলে রহিম চুরি করেছে।
-থানা থেকে পুলিশ চলে আসে।
-পুলিশ এসে গ্রামের সবার কথা শুনে রহিমকে ধরে নিয়ে
যায়।
-দেখুন স্যার সত্যিই আমি চুরি করিনী।
-কে চুরি করেছে সেটা কিছুক্ষণেরর মাঝেই বলবি তুই।
-সত্যি স্যার আমি চুরি করিনী।
-কে শোনে কার কথা।
পুলিশ গ্রামের লোকের কথানুযায়ী রহিমকে অনেক
মারধর করে।
-এমন মার মারে রহিমকে,
মার শহ্য করতে না পেরে রহিম স্বীকার করে সে চুরি
করেছে।
পুলিশ তখন রহিমকে মারা বন্ধ করে দেই।
গ্রামের সবাইকে বলে পুলিশ,চোর স্বীকার করেছে, সেই
চুরিটা করেছে।
-গ্রামের লোকেরা রহিমের বাবাকে বলে চোর কখনে
ভালো হয় না।
-রহিমের বাবার চোখে পানি চলে আসে।
কি দিলো আজকে এই সমাজ।
ভালোজনকে বানালো চোর,আর
চোরকে বানালো ভালো।
-রহিমের আর পড়াশোনা করা হলো না।
-রহিম এখন জেলে।
সেযে একজন চোর।
-
-হ্যাঁ বর্তমান সমাজে এইরকম টা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে।
সমাজের সবাই বলে চোর কখনো ভালো হয় না।
আপনি একসময় চোর ছিলেন,
এখন আপনি চুরি করা বাদ দেন একদম ভালো মানুষ হয়ে
যান।
কিন্তু যখন অন্যকেউ আপনাদের গ্রামে চুরি করবে, সেদিন
সবাই আপনাকেই দোষ দিবে।
কারন আপনি আগে চোর ছিলেন।
মারা যাবার আগ পর্যন্ত বলবে সালা চোর ছিলো মরে
গেছে ভালই হয়েছে।
প্রতিটি মানুষই একজন মানুষের পেছনের দিক দেখে।
পেছনের খারাপ দিক গুলো দেখেই তাকে খারাপ বলে।
যদি সে এখন ভালো হয় তবুও সে খারাপ,কারন পেছনে সে
খারাপ ছিলো।
-আমাদের এখনকার সমাজে এমনটা প্রতিনিয়ত চলছে।
ভালোকে সবাই খারাপ বলছে আর খারাপকে ভালো।
-একটা সমাজ পারে একটা খারাপকে ভালো করতে।
কিন্তু তারা সেটা না করে খারাপ যদি ভালো হয়ে যায়
তবুও বলবে সে খারাপ।
-পেছনে কি ঘটেছে, সেটা দেখে কখনো মানুষ চিনা যায়
না।
কিন্তু সমাজ সেটা করে।
আগেই পেছনের দিকটা দেখবে।
-এটাই আমাদের বর্তমান সমাজ।

Total Pageviews