জানাযার নামাজ কেন এবং কিভাবে পড়বেন?

জানাযার নামাজ মৃত ব্যক্তির মুক্তি কামনায়
সমবেত দোয়া। এ নামাজ আদায় করা প্রত্যেক
মুসলমানের জন্য ফরজে কিফায়া। প্রত্যেক
সমাজের পক্ষ থেকে যে কোনো একজন
জানাযায় অংশগ্রহণ করলে দায়িত্ব আদায় হবে।
সমাজের কেউ অংশ গ্রহণ না করলে গোনাহগার
হবে। তবে জানাযার নামাজে অংশ গ্রহণ করা
অনেক বড় সাওয়াবের কাজ।
যেহেতু জানাযায় অংশ গ্রহণ করা মুসল্লিদের
জন্য সাওয়াব বর্ধন এবং মৃত ব্যক্তির নাজাতের
জন্য সুপারিশ। তাই জানাযায় লোক সংখ্যা
যতবেশি হবে ততই ভালো এবং মুস্তাহাব। আর
জানাযার নামাজ আদায় কালে কাতার বেজোড়
হওয়া উত্তম।
জানাযার নামাজ মূলত মানুষের মৃত্যুবরণ করার
সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় প্রতিদিন এ নামাজ
আদায় করা হয় না। তাই স্বাভাবিকভাবেই
অনেকেই জানাযার নামাজ আদায় করতে গিয়ে
সঠিকভাবে আদায় করতে পারে না।
মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার এবং
নিজেদের জন্য সাওয়াব বর্ধনে জানাযার নামাজ
আদায় করার
নিয়ম-পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
>> প্রথমত মৃত ব্যক্তিকে ক্বিবলার দিকে ইমাম
ও মুসল্লিদের সামনে রাখা।
>> মুসল্লিগণ নামাজের ন্যায় জানাযার জন্য
অজু করে ইমামের পিছনে ক্বিবলামুখী হয়ে
দাঁড়াবে।
>> মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে ইমাম তার মাথার
দিকে এসে দাঁড়াবে। আর মহিলা হলে কফিনের
মাঝ বরাবর দাঁড়াবে।
>> রুকু সিজদাবিহীন চার তাকবিরের সঙ্গে
দাঁড়িয়ে জানাযার নামাজ আদায় করবে।
>> ইমাম সাহেব কাঁধ বা কানের লতি পর্যন্ত
দু’হাত উঠিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত
বাঁধবে। মুসল্লিগণ তাঁর অনুকরণ করবে।
>> ওয়াক্তিয়া নামাজের ন্যায় ডান হাত বাম
হাতের ওপর রাখবে।
>> প্রথম তাকবিরের পর ছানা পড়বে। (কেউ
কেউ সুরা ফাতিহা পড়ে অন্যান্য সুরা
মিলানোর কথা উল্লেখ করেছেন।)
>> অতঃপর ইমাম ছানা পড়ার পর দ্বিতীয়
তাকবির দিবে। মুসল্লিগণ দ্বিতীয় তাকবিরের পর
দরূদে ইবরাহিম পড়বে।
>> ইমাম দরূদে ইবরাহিম পড়ে তৃতীয় তাকবির
দিবে। তাকবিরের পর ইখলাসের সঙ্গে হাদিসে
বর্ণিত দোয়া থেকে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া
করবে।
>> ইমাম মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া পড়ার পর
চতুর্থ তাকবির দিবে। তাকবিরের পর যথাক্রমে
ডানে ও বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে
জানাযার নামাজ শেষ করবে। মুসল্লিগণ
ইমামের অনুসরণ করবে।
হাদিসে এসেছে যারা জানাযার নামাজে উপস্থিত
হবে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে এক কিরাত
সাওয়াব দান করবেন। আর যারা জানাযার
নামাজে উপস্থিত হয়ে নামাজ আদায় করবে এবং
কবরস্থানে গিয়ে মৃত ব্যক্তিকে দাফন করবে;
আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে দুই কিরাত
সাওয়াব দান করবেন। আর এক কিরাতের পরিমাণ
হলো ওহুদ পাহাড়ের সমান।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মৃত
ব্যক্তির মাগফিরাত কামনায় এবং নিজেদের
সাওয়াব বৃদ্ধিতে সুন্দরভাবে জানাযার নামাজ
আদায় করার এবং দাফন পর্যন্ত অবস্থান করার
তাওফিক দান করুন। আমিন।

Total Pageviews